মহামারি রুখতে সচেষ্ট এবং সচেতনতা জরুরি

মহামারি রুখতে সচেষ্ট এবং সচেতনতা জরুরি

শুভাশিস ব্যানার্জি শুভ: ‘ডায়েবেটিস’ শব্দটি আমাদের সবার কাছেই বেশ পরিচিত। এমন কোনো পরিবার খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে কোনো ডায়াবেটিসের রোগী নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, ডায়াবেটিস এখন একটি মহামারি রোগ। এই রোগের অত্যধিক বিস্তারের কারণেই সম্প্রতি এমন ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। প্রশ্ন আসতেই পারে, ডায়াবেটিস কী? আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন বলছে, ডায়াবেটিস এমনই একটি রোগ, যা কখনো সারে না। কিন্তু এই রোগকে সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের উদ্যোগে প্রতিবছর ১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালন করা হয়। জাতিসংঘ দিবসটির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছে। তাই পৃথিবীর সব দেশ আশা করা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সব দেশের নীতিনির্ধারক তাঁদের দেশের স্বাস্থ্যসেবা পরিকল্পনা উন্নয়ন কাঠামো তৈরি করবে। দিনটি পালনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে ডায়েবেটিস রোগের লক্ষণ, গতিধারা, চিাকৎসা এবং রোগটি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা সর্ম্পকে গণসচেতনতা বৃদ্ধি করা। ১৪ নভেম্বর ডায়েবেটিস দিবস হিসেবে ঘোষণার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো এই দিন ফ্রেডারিক ব্যাটিং এর জন্মদিন। ফ্রেডারিক ব্যাটিং তাঁর সহযোগী চার্লস বেষ্টকে নিয়ে ডায়েবেটিস রোগ নির্ণয়ের মহৌষধ ইনস্যুলিন আবিস্কার করেন। ২০০৭ সালে জাতিসংঘের গৃহীত প্রস্তাবের সাথে সাথে নীল বৃত্ত (ব্লু সার্কেল) লোগোটি নির্বাচিত হয়। নীল বৃত্ত জীবন ও স্বাস্থ্যের ধনাত্মক প্রতীক,নীলাকাশ সব জাতিকে সংঘবদ্ধ করেছে এবং এ কারণে জাতিসংঘের পতাকার রঙও নীল। নীল বৃত্ত বিশ্বব্যাপী ডায়াবেটিস মহামারী নিয়ন্ত্রণ ও জয়ে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের প্রতীক।

ডায়েবেটিস রোগীদের অন্যান্য নাগরিকের মতো চিকিৎসা সেবা প্রদান ও সেই সাথে তাদের শিক্ষা এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করা জাতিসংঘ ঘোষিত মানবাধিকার আইনের অন্যতম প্রধান শর্ত। আর্ন্তজাতিক ডায়েবেটিস ফেডারেশনের ১০০টির বেশি সদস্য ভুক্ত দেশে একই চেতনায় বিশ্বাসী। পৃথিবীর উন্নত দেশে যে সব রোগের কারণে মৃত্যু ঘটে বা ঘটার আশঙ্কা থাকে,সেসব রোগের মধ্যে ডায়েবেটিস এর অবস্থান চর্তুথ। বাংলাদেশসহ বিশ্বে প্রতি সাত সেকেন্ডে একজন মানুষ ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান (নিপোর্ট)-এর একটি জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশে মোট ডায়াবেটিস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১ কোটি ১০ লাখ। এদের মধ্যে ১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সীদের সংখ্যা ২৬ লাখ আর ৩৫ বছরের বেশি বয়সীদের সংখ্যা ৮৪ লাখ। এক পরিসংখ্যান মতে, শতকরা ৯০ ভাগ ডায়েবেটিস রোগীই ইনস্যুলিন অনির্ভরশীল। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস পৃথিবীতে মহামারি আকারে বিরাজ করছে। বাংলাদেশে যেমন ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বেশি, তেমনি ডায়াবেটিস বৃদ্ধির হারও বেশি। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের স্থান শীর্ষ ১০ ডায়াবেটিস সংখ্যাধিক্য দেশের মধ্যে দশম। কিন্তু আরও ভয়াবহ তথ্য হলো, ২০৩০ ও ২০৪৫ সালে বাংলাদেশ নবম অবস্থানে থাকবে। আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের হিসাব মতে, ২০১৯ সালে প্রতি ১১ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন, যাঁর মোট পরিমাণ ৪২৫ মিলিয়ন। ২০৪৫ সালে ৪৮ শতাংশ বেড়ে তা ৬২৯ মিলিয়ন হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পৃথিবীর মোট ডায়াবেটিস রোগীর ৮৭ শতাংশই উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশগুলোতে বাস করছেন। বাংলাদেশে যেমন ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বেশি, তেমনি ডায়াবেটিস বৃদ্ধির হারও বেশি। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের স্থান শীর্ষ ১০ ডায়াবেটিস সংখ্যাধিক্য দেশের মধ্যে দশম। কিন্তু আরও ভয়াবহ তথ্য হলো, ২০৩০ ও ২০৪৫ সালে বাংলাদেশ নবম অবস্থানে থাকবে। পৃথিবীতে বর্তমানে উচ্চ হারে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে বাংলাদেশ, ভারত ও চীনে।

বাংলাদেশসহ সব উন্নয়নশীল দেশে খুব দ্রুত নগরায়ণ হচ্ছে, মানুষের দৈহিক ওজন বৃদ্ধি পাচ্ছে আনুপাতিক ও কাঙ্ক্ষিত হারের চেয়ে বেশি, মানুষের দৈহিক শ্রম দিনে দিনে কমে যাচ্ছে, বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণে মানসিক চাপ বেড়েছে অনেকগুণ। উন্নত দেশগুলোতে ডায়াবেটিস রোগীর হার কমলেও তবে তা খুব উল্লেখযোগ্য হারে নয়। অঞ্চল ভেদে মানুষের মধ্যে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার কিছুটা চরিত্রগত ভিন্নতা রয়েছে। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রধানত টাইপ ২ ও অন্যান্য বিশেষ ধরনের ডায়াবেটিস দেখা যায়। গর্ভাবস্থায় প্রথমবার ডায়াবেটিস ধরা পড়ার হারও বৃদ্ধি পাচ্ছে এসব দেশে। উন্নত দেশে নারীদের বেশি সংখ্যায় টাইপ ২ ডায়াবেটিসে ভুগতে দেখা যায়, আর উন্নয়নশীল দেশে পুরুষেরা টাইপ ২ ডায়াবেটিসে বেশি সংখ্যায় ভোগেন। অন্যদিকে বিপুলসংখ্যক তরুণ-তরুণী টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছেন।

২০২০ সালের ১৪ নভেম্বর ডায়াবেটিস প্রিভেনশন এডুকেশন প্রোগ্রাম (ডিপেপ) প্রতিষ্ঠিত হয়। যখন কোভিড১৯ আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বে এক মহামারী রূপ ধারন করে, বহু লোক আক্রান্ত হয়, বহু লোক মৃত্যু বরণ করে, পাশাপাশি এই কোভিড এর কারণে ডায়াবেটিস এর হার অতি মাত্রায় বেড়ে যায়। দেশের জনগণকে সচেতন করার জন্য প্রিভেনশন এবং এডুকেশন এই দুটি শব্দকে মাথায় রেখে একটি প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয়, যার নাম ডায়াবেটিস প্রিভেনশন এডুকেশন প্রোগ্রাম যার ফাউন্ডার এবং কনভেনার। এই প্রোগ্রামটির লক্ষ এবং উদ্দেশ্য হচ্ছে যে, ডায়াবেটিস কে প্রতিরোধ করা। ডায়াবেটিসকে ৩ ভাবে প্রতিরোধ করা যায়। তার মধ্যে প্রথমটি হলো, প্রাইমারী প্রিভেনশন মানে ডায়াবেটিস যাতে না হয়, দ্বিতীয়টি হলো সেকেন্ডারি প্রিভেনশন মানে ডায়াবেটিস এর জটিলতা যেনো রোধ করা যায়, তৃতীয়টি হলো জটিলতা যদি হয়েও যায় সেই জটিলতার যেনো কোনো প্রকার উন্নতি বা প্রোগ্রেস না হয়। এই প্রিভেনশনগুলোর ব্যাপারে জনগণকে সচেতন করতে হবে, কারণ প্রিভেনশনের কোনো বিকল্প নেই। প্রিভেনশন ইজ দ্যা বেস্ট ওয়ে টু কনট্রোল ডায়াবেটিস। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এডুকেশন, মানুষকে মোটিভেশন করতে হলে এডুকেশনেরও নেই। থেরাপিটিক এডুকেশন অন্যতম পথ যেমন কিভাবে ইনসুলিনের প্রয়োগ করতে হবে, ফুট কেয়ার, কিভাবে ডায়েট ম্যানেজ করতে হয়, নিউট্রিয়েশন, স্বল্প মূল্যের কি কি ওষুধ ব্যবহার করা যায়, সরকারী বা বেসরকারি পর্যায়ে কিভাবে অল্প খরচে ডায়াবেটিস চিকিৎসা করা যায়, ফিজিক্যাল এক্সারসাইজ, ফুড হ্যাবিটস ইত্যাদি বিষয়ে এডুকেশনের মাধ্যমে জনসচেতনতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।

বিপুলসংখ্যক ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা ও আরও বেশিসংখ্যক মানুষকে ডায়াবেটিসের হাত থেকে রক্ষা করতে এখনই আমাদের সচেতন হওয়া জরুরি। ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যেটিকে প্রতিরোধ করার যথেষ্ট সুযোগ আছে। কিন্তু একবার ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে বাকি জীবন ডায়াবেটিস নিয়েই কাটাতে হবে এবং প্রহর গুনতে হবে যে কখন ডায়াবেটিস-সংক্রান্ত জটিলতাগুলো দেখা দেয়। তাই সব স্তরের মানুষকে জেনে-বুঝে সচেতনভাবে ডায়াবেটিস প্রতিরোধের কর্মযজ্ঞে নিজের সামর্থ্য অনুসারে অংশগ্রহণ করতে হবে। ডায়াবেটিস নিয়ে নিরন্তর গবেষণা চলছে। নতুন নতুন ওষুধ যেমন আবিষ্কৃত হয়েছে, তেমনি প্রতিরোধ-ব্যবস্থাপনার কৌশলও পরিবর্তিত হচ্ছে। কিন্তু সব কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রে আছেন বর্তমানে ডায়াবেটিসের রোগী এবং যাঁদের ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা আছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস চিকিৎসা যেমন জরুরি, তার চেয়েও বেশি জরুরি ডায়াবেটিস প্রতিরোধের সর্বাত্মক সুগভীর কর্মকাণ্ড। রাষ্ট্রকেই ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে নিয়ে এ কাজে নেতৃত্ব দিতে হবে সব স্তরের মানুষকে যুক্ত করে। পাঠ্যসূচি থেকে শুরু করে নগর-পরিকল্পনা, বিদ্যালয় স্থাপনসহ সব ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস প্রতিরোধসহ মেটাবলিক রোগগুলো নিয়ন্ত্রণের কাঠামোগত উন্নতি করতে হবে।

বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৪৬ কোটির অধিক। অথচ ১৯৮৫ সালে এ সংখ্যা ছিল মাত্র তিন কোটি। এক জরিপমতে, ২০৩৫ সালের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৫৯ কোটিতে পৌঁছানোর আশঙ্কা করা হচ্ছে। বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে এই রোগ এখন মহামারি রূপ নিচ্ছে। ২০১৯ সালে শীর্ষ ১০ ডায়াবেটিস সংখ্যাধিক্যের দেশের মধ্যে বাংলাদেশ দশম স্থানে রয়েছে। কিন্তু ২০৩০ সালের মধ্যে তা নবম স্থানে চলে আসবে। ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিক ফেডারেশনের হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ৮৪ লাখ। যাদের প্রায় অর্ধেকই নারী। ২০৪৫ সালে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে দেড় কোটিতে। এ ছাড়া বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে ১০০ জনের মধ্যে ২০ গর্ভবতী নারীই গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন, যাদের ৬৫ শতাংশই পরবর্তীকালে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন।

ডায়েবেটিসের জটিলতায় হৃদরোগ,স্ট্রোক, কিডনীর অক্ষমতা প্রভৃতি রোগের ঝুঁকি বেশি থাকে। বাংলাদেশে বারডেমের কেন্দ্রীয় গবেষণা ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান এক পরিসংখ্যানে দেখিয়েছে যে, ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশে মোট ডায়েবেটিস রোগীর সংখ্যা ছিলো ১০ লাখ। ১৯৯৫ সালে এ সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ২৫ লাখে দাঁড়ায়। অর্থাৎ এই হিসেব অনুযায়ী প্রতিদিন-ই ডায়েবেটিস রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত এক যুগ ধরে নবজাতক থেকে শুরু করে ২০ বছরের কম বয়সী ছেলে-মেয়েদের মধ্যে ডায়াবেটিসের সংখ্যা আশংকাজনকভাবে বাড়ছে। বিষাক্ত খাদ্যসামগ্রীর কারণে ডায়াবেটিস হওয়ার আশংকা রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ অভিমত পোষণ করছেন। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি এবং ডায়াবেটিস হাসপাতালের পরিসংখ্যানে জানা যায়, চাহিদার তুলনায় ডায়াবেটিস হাসপাতাল এবং ডায়াবেটিক সমিতির অধিভুক্ত ৫৬টি কেন্দ্রে ও ন্যাশনাল হেলথ নেটওয়ার্কের মাত্র ২০ ভাগ রোগীর চিকিৎসা দেয়া সম্ভব। এই হিসেব অনুযায়ী শতকরা ৮০ ভাগ রোগী-ই চিকিৎসার বাইরে থাকছে। গবেষকদের ধারণা অনুযায়ী একজন ডায়েবেটিস রোগীর বিষন্নতায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা সুস্থ ব্যক্তির চেয়ে অনেক বেশি। ডায়েবেটিস সর্ম্পকে সুষ্ঠু জ্ঞান না থাকায় এ ধরণের অবস্থার সৃষ্টি হয়। ২০০২ সালের এক সমীক্ষায় দেখা যায়, বিষন্নতায় একজন ডায়েবেটিস রোগীর চিকিৎসা খরচ একজন সাধারণ ডায়েবেটিস রোগীর চিকিৎসা খরচের প্রায় ৫ গুণ।

‘ডায়াবেটিস’ গ্রীক শব্দ। প্রাচীন গ্রীক চিকিৎসক এরিটিউস এই নামকরণ করেন। অতিরিক্ত পিপাসা ও অতিরিক্ত মূত্রত্যাগ এই রোগের বৈশিষ্ট্য। ডায়াবেটিস মেলিটাস রোগের মূল কারণ ইনসুলিনের অভাব। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগ,পরিশ্রমহীন বা নিয়ন্ত্রণহীন জীবনযাপন বিপাক ক্রিয়াকে আরো দুর্বল করে দেয়। এ অবস্থায় ‘ইনসুলিন’ নামে শরীরের একটি প্রয়োজনীয় হরমোন প্রয়োজন মতো উৎপন্ন হতে পারে না। ফলে খাবারের সঙ্গে গ্রহণ করা কার্বোহাইড্রেট ঠিকমতো বিপাক হয় না। ওই কার্বোহাইড্রেট বা শর্করাই প্রস্রাবের সঙ্গে বার বার বের হয়ে আসে। যদিও সব বহুমূত্রই শর্করাযুক্ত নয়। শর্করাবিহীন বহুমূত্রও আছে, যাকে বলা হয় ডায়াবেটিস টাইপ-২। সংসারের উপার্জনক্ষম ও কর্মক্ষম জনশক্তিরাই মূলত: এ রোগে আক্রান্ত। শহুরে আধুনিক জীবন যাপন পদ্ধতি এর জন্য আংশিক দায়ী। কায়িক পরিশ্রমহীন জীবনযাপন পদ্ধতি ও শরীরের ওজন বৃদ্ধি না থামাতে পারলে ভবিষ্যতে এ রোগ আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে শুধু নিজে সচেতন হলেই চলবে না, অন্যকেও সচেতন করতে হবে। এছাড়া ফাস্ট ফুড ও কোমল পানীয় জাতীয় খাবার পরিহার করলে এবং শারীরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে ডায়বেটিস অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব।।

শুভাশিস ব্যানার্জি শুভ: প্রধান সম্পাদক,এসবিডি নিউজ24 ডট কম।।

jsb.shuvo@gmail.com

editor