কপ-২০ জলবায়ু সম্মেলনঃ প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করার দাবি

কপ-২০ জলবায়ু সম্মেলনঃ প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করার দাবি

নিজস্ব প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুর রাজধানী লিমাতে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণ, কপ-২০ জলবায়ু সম্মেলনে চলমান আলোচনার ক্ষেত্রে বিদ্যমান সংকট এবং অচলাবস্থা সৃষ্টির সমালোচনা করেন এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় জরুরি ভিত্তিতে জলাবায়ু বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় স্পষ্ট-সুনির্দিষ্ট একটি রোডম্যাপ তৈরির জন্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানিয়েছন। তারা আগামী কপ সম্মেলনে অনুষ্ঠিতব্য “প্যারিস চুক্তিতে” জলবায়ু পরিবর্তন কর্মপরিকল্পনা বিশেষ করে প্রশমন ও অভিযোজনেরে ক্ষেত্রে আইনী বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করারও দাবি জানান। পেরুতে জাতিসংঘ কর্তৃক আয়োজিত চলমান জলবায়ু সম্মেলনের অংশ হিসেবে সম্মেলন কেন্দ্রের মিডিয়া সেন্টারে বাংলাদেশের কয়েকটি অধিকার ভিত্তিক নাগরিক সংগঠন একশন এইড বাংলাদেশ, বাংলাদেশ পরিবশের আন্দোলণ (বাপা), বিপনেট-সিসিবিডি, সিডিপি, সিসিডিএফ, সিপিআরডি, সিএসআরএল, বিসিজেএফ, এফইজেবি, কোস্ট ট্রাস্ট, ইক্যুইটিবিডি, বিসিএএস, এনসিসিবি এবং আইসিসিসিএডি এদের আয়োজনে ” Comments on Latest On Going CoP 20 Lima Climate Negotiations on the Interest of MVC and LDC People: Civil Society Perspectives” শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ এন্ড ডেভেলপমেন্টের ড. সলিমুল হক। সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন এ্যকশন এইড বাংলাশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মিসেস ফারাহ কবির, বাংলাদেশ সেন্টার ফর এডভান্স স্টাডিজের গোলাম রাব্বানী এবং নেটওয়ার্ক ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ বাংলাদেশের মিজানুর রহমান বিজয়। আয়োজকদের পক্ষ থেকে উপস্থাপিত লিখিত বক্তব্যে বক্তারা হতাশা ব্যক্ত করে বলা হয় যে, বিশ্ব নেতৃবৃন্দ জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব থেকে পৃথিবিকে বাঁচাতে তাদের প্রতিশ্র“তি পূরণের লক্ষ্যে কোনও ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ নিচ্ছেন না বরং অযথা সময়ক্ষেপন করছেন এবং এর ফলে প্যারিস চুক্তিতে প্রত্যাশিত মূল লক্ষ্য পূরনে কোন আশার আলো দেখা যাচ্ছে না, যা দেখে আমরা হতাশ ও ক্ষুব্ধ। তারা আরও বলেন, এই সম্মেলনে নেতৃবৃন্দের মধ্যে কোনও জরুরি প্রয়োজনীয় কোনও কিছু করার প্রবণতাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।  সংবাদ সম্মেলন আয়োজকদের পক্ষ থেকে অভিযোজন এবং প্রশমন সংক্রান্ত দাবিগুলো তুলে ধরতে গিয়ে এ্যকশন এইড বাংলাদেশের ফারাহ কবির বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ক্ষতিগ্রস্থ দেশগুলোর জাতীয় পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ধনী দেশগুলোকে অবশ্যই প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা করতে হবে, লিমা সম্মেলন থেকেই “অভিযোজন লক্ষ্য-২০১৫” নির্দিষ্ট করতে হবে এবং অভিযোজনের ক্ষেত্রে জেন্ডার প্রসঙ্গ সুবেিবচনা করতে হবে। অভিযোজনের জন্য অর্থায়ন ব্যবস্থার একটি নিবন্ধন প্রক্রিয়া থাকতে হবে, যেখানে এসকল কাজের জন্য সুনির্দিষ্ট মাপকাঠিসমুহ থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন, উন্নত দেশগুলোর প্রতি আমাদের দাবি, পৃথিবির তাপমাত্রা যেন কোনভাবেই ২ ডিগ্রির বেশি না বাড়ে সে ব্যবস্থা যেন তারা অব্যশই গ্রহণ করে। এনেক্স-০১ ভুক্ত দেশগুলোকে অবশ্যই তারে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা  আগামী ২০২০ সালের মধ্যে ৪৫% এবং ২০৫০ সালের মধ্যে ৯৫% কমিয়ে আনতে হবে।

বিসিএএস’র গোলাম রাব্বানী বলেন, আমরা গ্রিন ক্লাইমেন্ট ফান্ডে উন্নত দেশগুলোর ১০ বিলিয়ন দেওয়ার উদ্যোগকে স্বাগত জানাই কিন্তু ২০২০ সালের পর  এই্ তহবিলের কী হবে তর একটি স্পষ্ট রূপরেখা প্রণয়নের দাবি জানাচ্ছি। আমরা মনে করি অভিযোজনের ক্ষেত্রে জাতীয় অর্থায়নের অব্যশই প্রয়োজন রয়েছে।  কিন্তু বিভিন্ন তহবিলে অর্থায়নের ক্ষেত্রে কাল বিলম্বেব কারনে আমরা উদ্বিগ্ন। অভিযোজন এবং প্রশমনের কর্মসুচি বাস্তবায়নে উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশগুলোকে কারিগরি সহযোগিতা করা, প্রযুক্তি হস্তান্তরে উন্নত দেশগুলোকে অবশ্যই এগিয়ে আসতে হবে। এক্ষেত্রে আর্থিক ও অবকাঠামোগত সহযোগিতাও নিশ্চিত করতে হবে। ড. সলিমুল হক বলেন, বিশ্বের তাপমাত্রা যেন ২ ডিগ্রির বেশি বাড়ে না পরে সেদিকেই বিশ্বকে এখন নজর দিতে হবে এবং বিজ্ঞান-ভিত্তিক কার্বন হ্রাসের ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি সাম্য ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তি নিশ্চিত করার জন্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান।

নিজস্ব প্রতিনিধি