তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন ও ধূমপানমুক্তকরণে এগিয়ে আসার আহবান

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন ও ধূমপানমুক্তকরণে এগিয়ে আসার আহবান

নিজস্ব প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ আইন পালনে মানুষকে উৎসাহী করতে ও পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতিকর দিক থেকে শিশু-নারীসহ অধূমপায়ীদের রক্ষা করতে সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ধূমপানমুক্ত করা উচিত। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০৫ এর সংশোধনীতে পাবলিক প্লেস ও পরিবহনসহ সকল সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ধূমপানমুক্ত করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। দায়িত্বশীল নাগরিকদের আইনটি পালনের এগিয়ে আসা প্রয়োজন। ৩০ এপ্রিল (বুধবার) সকালে ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট কনফারেন্স কক্ষে (জাফরাবাদ, রায়েরবাজার) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল (এনটিসিসি) এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তারা এই অভিমত ব্যক্ত করেন।

ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক সাইফুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের মাননীয় হুইপ মো. শহীদুজ্জামান সরকার, বিশেষ অতিথি ছিলেন মাননীয় সংসদ সদস্য (রাজশাহী-৩) মো. আয়েন উদ্দিন। আলোচক হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার ডা. মোস্তফা জামান, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল এর সমন্বয়কারী আমিনুল আহসান, দি ইউনিয়নের টেকনিক্যাল এডভাইজার ইসরাত চৌধুরী এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন। সভাটি সঞ্চালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রকল্প সমন্বয়কারী আমিনুল ইসলাম সুজন।
আমিনুল আহসান বলেন, পৃথিবীর ১০টি তামাক ব্যবহারকারী দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বাংলাদেশ কর্মস্থলে ৬৩% মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয়। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় বাংলাদেশ সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি সংশোধন করেছে। আইনটি কার্যকর বাস্তবায়নে সকলের সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন। বক্তারা বলেন, তামাক চাষ ও উৎপাদন প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ কৃষি, এবং পরিবেশের উপর প্রভাব ফেলছে। দেশের অনেক এলাকায় তামাক চাষের কারণে মাটির উর্বরতা হ্রাস, বাতাস, পানি ও পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। খাদ্যের জমিতে তামাক চাষ বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে দেশে খাদ্য ঘাটতি বৃদ্ধি পাবে। অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের হুইপ মো. শহীদুজ্জামান এম.পি বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা ও পরিবেশ রক্ষায় তামাক চাষ হ্রাস করা প্রয়োজন। তামাক কোম্পানিগুলো যাতে সরকারীভাবে সার সুবিধা না পায় সে বিষয়ে কঠোর দৃষ্টি রাখতে হবে। অপরদিকে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটির বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিধিমালাটি দ্রুত প্রণয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। মো. আয়েন উদ্দিন এম পি বলেন, বাসে ট্রেনে সিগারেটে খাওয়ার প্রবণতা কমে গেছে। আইন ও তামাক ব্যবহারের ক্ষতি সম্পর্কে জনগনকে সচেতন করতে হবে। ইসরাত চৌধূরী বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো প্রতিনিয়ত বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের ধারা ভঙ্গ করছে। তামাক কোম্পানিগুলোর অবৈধ বিজ্ঞাপন বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ডা. মোস্তফা জামান বলেন, বিশ্বের অনেক দেশে ধূমপানের স্থান তুলে দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশে পাবলিক প্লেস ও পরিবহন শতভাগ ধূমপানমুক্ত করতে হবে। সেই সাথে ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করতে হবে। তামাকের ব্যবহার কমাতে এর উপর কর বাড়ানো দরকার। মো. জসিম উদ্দিন বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি বাস্তবায়নে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি পালণের লক্ষ্যে মানুষের আচরণগত পরিবর্তন আনতে হবে। তমাক কোম্পানিগুলো আইন লঙ্ঘন করে যেসব বিজ্ঞাপন প্রচার করছে, তা বন্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
সভাপতির বক্তব্যে সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০৫-এর সংশোধন জনগণের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশার ফসল। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে যত দ্রুত সম্ভব বিধিমালা প্রণয়ন করা দরকার। সভায় সারাদেশ থেকে আসা ৫০ টি সংগঠনের প্রতিনিধি অংশগ্রহন করে।

নিজস্ব প্রতিনিধি