হরতালকে সামনে রেখে রাজধানীতে অন্তত ৫টি গাড়িতে আগুন,বহু ককটেল বিস্ফোরণ

হরতালকে সামনে রেখে রাজধানীতে অন্তত ৫টি গাড়িতে আগুন,বহু ককটেল বিস্ফোরণ

নিজস্ব প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ ইসলামী ছাত্রশিবির ও বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের হরতালের আগের দিন রাজধানীতে অন্তত ৫টি গাড়িতে আগুন দেয়া হয়েছে। এছাড়াও বহু কক্টেল বিস্ফোণ ঘটানা হয়েছে। জানা গেছে, নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যলয়ের সামনে সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ৪টি ককটেল বিস্ফোরণ হয়। পরে এটিএন নিউজের গাড়িসহ তিনটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এটিএন নিউজরে গাড়িচালক সোলাইমান অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। আগুনে তার কান ও চুল পুড়ে গেছে। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়াও বৈশাখী ও মাছরাঙা টেলিভিশনের গাড়ি ভাঙচুর করে হামলাকারীরা। পল্টন থানার ওসি (তদন্ত) আলমগীর হোসেন অভিযোগ করে বলেন, আমাদের লক্ষ্য করেই ককটেলগুলো মারা হয়েছে। এ সময় ৩টি গাড়িতে আগুন দেয়া হয়। রমনা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মশিউর রহমান জানান, সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বিজিএমইএ ভবনের সামনে থাকা রাষ্ট্রায়াত্ত গ্যাস বিতরণকারী সংস্থা তিতাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিবহনে নিয়োজিত একটি বাসে আগুন দেয় হরতাল-সমর্থকরা। অগ্নিনির্বাপক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণকক্ষের দায়িত্বরত কর্মকর্তা ফরহাদুজ্জামান তারেক জানান, গতকাল বিকাল পৌনে ৪টার দিকে কারওয়ান বাজারে বিজিএমইএ ভবনের সামনে বাসটিতে আগুন দেয়া হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এর আগে দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সামনে শিক্ষার্থীদের আনা-নেয়ার কাজে ব্যবহৃত একটি দোতলা বাসে আগুন দেয়া হয়। পুলিশের সহকারী কমিশনার ইমানুল হোসেন জানান, সোমবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে দুর্বৃত্তরা ‘তরঙ্গ’ নামের বাসটিতে আগুন দেয়ার পর ফায়ার ব্রিগেডের দু’টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। দোতালা বাসটির প্রায় সব আসন পুড়ে গেছে বলে ইমানুল হোসেন জানান। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আনা-নেওয়ায় কাজে ব্যবহৃত বিআরটিসির বেশ কয়েকটি বাস বিশ্ববিদ্যালয় মাঠের পূর্ব পাশে দাঁড় করানো ছিল। দুর্বৃত্তরা শিক্ষার্থীর ছদ্মবেশে এসে একটি বাসে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়।
অপরদিকে আমাদের রাজশাহী প্রতিনিধি জানানঃ রাজশাহী মহানগরীর শালবাগান এলাকায় গতকাল সোমবার সকালে শিবিরের সাথে পুলিশের আবারো ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় শিবিরকর্মীরা পুলিশের এসআই জাহাঙ্গীর আলমকে একা পেয়ে বেধড়ক পিটিয়ে তার মাথায় ইট মেরে থেতলে দিয়ে অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়েছে। এ ঘটনায় আরো দুই কনেস্টবল শিবিরের ছোড়া ইটের আঘাতে আহত হয়েছে। প্রত্যদর্শীরা জানায়, সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শিবির কর্মীরা এক ঝটিকা মিছিল বের করলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এসময় পুলিশ সদস্যদের ওপর শিবির সদস্যরা পেছন থেকে ঘিরে ফেলে আকস্মিক হামলা চালায়। তখন পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারশেল, রাবার বুলেট এবং সাউন্ড গ্রেনেড নিপে করে। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবারো হঠাৎ করেই দায়িত্বরত পুলিশের ওপর একদল শিবির ক্যাডার হামলা চালায়। তারা পুলিশকে ল্য করে পরপর কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এসময় পুলিশের অন্য দুই সদস্য পিছু হটতে পারলেও এসআই জাহাঙ্গীর দল থেকে ছাড়া পড়ে যায়। তখন তাকে একা পেয়ে শিবির ক্যাডাররা এসআই জাহাঙ্গীরের নাকে-মুখে-পিঠেসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ইট দিয়ে আঘাত করে থেঁতলে দেয়। এ অবস্থা দেখে দুই কনেস্টবল তাকে বাঁচাতে কনেস্টবল সফিকুল ইসলাম ও সেলিম এগিয়ে আসলে তাদেরকেউ ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে আহত করে। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে শিবির ক্যাডাররা এসআই জাহাঙ্গীরের কাছ থেকে তার রিভলবার ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় পুলিশ সদস্যরা এসআই জাহাঙ্গীরসহ অন্যদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় ওই এলাকায়সহ রাজশাহী শহর জুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ঘটনার পরপরই শহরজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার এসএম মনিরুজ্জামান।

নিজস্ব প্রতিনিধি