সাড়ে তিন কোটি টাকার ৭ কেজি সোনার বিস্কুট উদ্ধারঃ মূল বাহক পলাতক!

সাড়ে তিন কোটি টাকার ৭ কেজি সোনার বিস্কুট উদ্ধারঃ মূল বাহক পলাতক!

সৌরভ চৌধুরী,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ আবারো হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সিভিল এভিয়েশনের আগমনী লাউঞ্জের বাথরুম থেকে উদ্ধার হয়েছে সোনার বিস্কুট। এবার উদ্ধার হয়েছে ব্যাগভর্তি ৭ কেজি সোনার বিস্কুট। পাচারকারী চক্র ওই সোনার বিস্কুট বিমানবন্দর বহুতল কার পার্কিংয়ের ছাদে নিয়ে হাতবদলের চেষ্টা করে। এ সময় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) গোয়েন্দা জালে ধরা পড়ে পাচারকারী চক্র। এদিকে এপিবিএন সোনার বিস্কুট উদ্ধার করলেও মামলা দায়ের করে গোয়েন্দা পুলিশ। গোয়েন্দা পুলিশের উত্তর জোনের এসআই মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। এপিবিএনের সহাকারী পুলিশ সুপার মেরিনা আক্তার জানান, স্বর্ণের মূল বাহক পালিয়ে গেলেও এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সিভিল এভিয়েশনের এক নিরাপত্তাকর্মীসহ ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা হচ্ছেন সিভিল এভিয়েশনের নিরাপত্তাকর্মী কবির হোসেন ড্রাইভার হেলাল এবং স্বর্ণের চালান নিতে আসা মোরশেদ। জিজ্ঞাসাবাদে সিভিল এভিয়েশনের নিরাপত্তাকর্মী কবির হোসেন এর আগেও একাধিকবার সোনার বার পাচার করেছে বলে জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, ৭ জানুয়ারী (সোমবার) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটের দিকে অ্যামিরেটসের একট বিমানে স্বর্ণের বারসহ এর বাহক শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে নামে। স্বর্ণের ওই মূল বাহক সোনার বিস্কুটভর্তি ব্যাগ বাথরুমে রেখে আত্মগোপন করেন। পরে সিভিল এভিয়েশনের নিরাপত্তাকর্মীরা আগে থেকে নির্ধারিত চুক্তিমতো তা নিজেদের হেফাজতে নেয়। সিভিল এভিয়েশনের নিরাপত্তাকর্মী কবির সোনার বিস্কুটগুলো বিমানবন্দরের বহুতল কার পার্কিংয়ে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকে প্রস্তুত ছিল গাড়িচালক হেলাল ও মোর্শেদ। পরে তারা স্বর্ণের চালান গ্রহণ করে পালানোর চেষ্টা করলে আর্মড পুলিশ তাদের হাতেনাতে পাকড়াও করে। নিরাপত্তাকর্মী কবির হোসেনের সঙ্গে আটক হওয়া মোর্শেদ (২৭) পুলিশকে জানান, সোমবার সকালে গালফ এয়ারলাইন্সের জিএফ -২৫০ নাম্বার ফ্লাইটে দুবাই থেকে গোপনে সোনার বারগুলো নিয়ে আসেন সাত্তার। কিন্তু বিমানবন্দরে এপিবিএনের কড়া নজরদারির কারণে সোনার চালান বের করার দায়িত্ব দেয়া হয় সিভিল এভিয়েশনের নিরাপত্তাকর্মী কবিরকে। আর এ জন্য তাকে ৩০ হাজার টাকা দেয়ার কথা ছিল। এ চালান ছাড়াও গত এক সপ্তাহ আগে মোর্শেদ নিজেও দুবাই থেকে সোনার বার নিয়ে আসেন। সে সময় কবির ছাড়াও সিভিল এভিয়েশনের আরো দুজন নিরাপত্তাকর্মী তাদের চালান বিমানবন্দর থেকে বাইরে এনে দিয়েছিলেন।
বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ জানায়, সকাল সোয়া ১০টায় নিরাপত্তাকর্মী কবীর সোনার বারগুলো নিয়ে বহুতল পার্কিয়ের কাছে যান সোনার চালান গ্রহণ করতে আসা মোর্শেদের কাছে দিতে। সোনার বার হস্তান্তরের সময় পুলিশ মোর্শেদের গাড়িচালক বেলালসহ তিনজনকে আটক করে বিমানবন্দর এপিবিএন অফিসে নিয়ে যায়। সেখানে বিমানবন্দরের দায়িত্বরত গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের উপস্থিতিতে সোনার বারগুলো খোলা হয়। চালানে পৃথক চারটি প্যাকেটে ৪০টি সোনার বার পাওয়া যায়, যার ওজন সাত কেজি। এর আনুমানিক মূল্য সাড়ে তিন কোটি টাকা। ঘটনার পর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল এ চক্রের সঙ্গে জড়িতদের সম্পর্কে জানতে আটক হওয়া তিন জনকে পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এ বিষয়ে বিমানবন্দর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বিশেষ প্রতিনিধি