কেশবপুর পশুহাটঃ প্রধান সড়কে তীব্র যানজট ॥ কর্তৃপক্ষ নির্বিকার

কেশবপুর পশুহাটঃ প্রধান সড়কে তীব্র যানজট ॥ কর্তৃপক্ষ নির্বিকার

মিজানুর রহমান,কেশবপুর প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ যশোরে কেশবপুর শহরের পশুহাট সংলগ্ন কেশবপুর সাগরদাঁড়ী সড়কের দুপাশ দিয়ে অবৈধ নসিমন, করিমন, আলমসাদু, ভডভডি সারিবদ্ধ ভাবে রাখার কারনে প্রতি হাটবারে ওই সড়কে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। এ সময় ছোট ছোট যানবাহন চালকদের বাধ্য হয়ে প্রায় ৩ কিলোমিটার ঘুরে কেশবপুর শহরে আসতে হয়। এ সমস্যা নিরসনে এলাকাবাসী দীর্ঘ দিন ধরে সড়কের দু‘পাশ থেকে অবৈধ যানবাহন অপসারনের দাবী জানিয়ে আসলে ও পৌর কর্তৃপক্ষের কোন মাথাব্যাথা নেই।
জানা গেছে, ৯০ দশকের দিকে যশোর- সাতক্ষীরা সড়কের কেশবপুর শহরের ত্রিমোহিনী মোড়ের যানজট নিরসনের লক্ষ্যে শহর থেকে পশুহাটটি স্থানান্তর করে কেশবপুর সাগরদাঁড়ী সড়কের কেশবপুর ডিগ্রী কলেজের পেছনে নেয়া হয়। ওই সড়কের ১২ কিলোমিটার দক্ষিনে মহাকবি মাইকেল মধুসুদন দত্তের জন্মস্থ্ান সাগরদাঁড়ী হওয়ায় সড়কটি জন গুরুত্বপূর্ণ। মহাকবির জন্মদিন উপলক্ষে মধুপলি¬তে প্রতি বছর জাতীয় ভাবে ৭ দিন ব্যাপি মধুমেলা উদযাপিত হয়ে থাকে। ফলে এ সড়ক দিয়ে পথচারিসহ ছোট বড় যানবাহন চলাচল দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ছাড়া কলারোয়া, পাটকেলঘাটা, তালাসহ দক্ষিনাঞ্চলের শতাধিক গ্রামের জনগন এ সড়ক দিয়ে চলাচল করে। কিন্তু সড়কটির দুপাশ প্রশস্ত না হওয়ায় পণ্যবাহী যানবহনের চাকায় রাস্তার দুপাশ কর্দমাক্ত হয়ে ছোট ছোট যানবাহনসহ পথচারিদের চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। যার কারনে প্রায় ঘটছে দূর্ঘটনা। এরপরও ওই সড়কের দুপাশ দিয়ে গড়ে উঠেছে কেশবপুর শহরের এক মাত্র পশুহাটটি।
পশুহাটটি পরিদর্শন কালে জানা যায়, হাটটি স্থাপিত হওয়ার পর থেকে দিন দিন পশুর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও এর জাগয়া আর প্রশস্ত করা হয়নি। সপ্তাহের প্রতি সোম ও বুধবার এখানে বসে পশুহাট। প্রতি হাটবারে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে গরু,ছাগল,ঘোড়া,ভেড়া অবৈধ যান নছিমন,করিমন,আলমসাদু, ভডভডি,পিকআপ ও ট্রাকে করে নিয়ে আসে এই হাটে বিক্রি করতে। হাটে যানবাহন পার্কিঙের কোন ব্যবস্থা না থাকায় পশু বহনে ব্যবহৃত যানবাহন গুলি পশুহাটের প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে সড়কের দুপাশ দিয়ে সারিবদ্ধ ভাবে রাখা হয়। এ সময় সড়কের দুদিক দিয়ে আসা পণ্যবাহী ভারী যানবহন পারাপার হতে বিঘœ সৃষ্টি হওয়ায় শুরু হয় তীব্র যানজট। ঘন্টার পর ঘন্টা চলা যানজটের কারণে প্রায় সময় ছোট ছোট যানবাহনকে প্রায় ৩ কিলোমিটার ঘুরে আসতে হয় শহরে। এ সমস্যা নিরসনে ৩ বছর আগে পৌর কর্তৃপক্ষ লাখ লাখ টাকা খরচ করে সড়কের দুপাশ দিয়ে ১ কিলোমিটার পর্যন্ত প্রশস্ত করে। কিন্তু সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষ দুপাশে সারিবদ্ধ ভাবে রাখা যানবাহন গুলো আপসারন না করায় দিন দিন যানজট তীব্র হচ্ছে। এদিকে, কুরবানীর ঈদকে সামনে রেখে একদিকে যেমন ব্যবসায়ী, ক্রেতা-বিক্রেতাদের আগমন ঘটছে এই হাটে, তেমনি পশুর পাশাপাশি পশু বহনে ব্যবহারিত যানবাহন ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে এ যানজট এখন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ সংকট নিরসনে ভূক্তভোগিরা দ্রুত রাস্তার দুপাশ থেকে অবৈধ যানবাহন অপসারনের সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পশুহাটের ইজারাদার পৌর কাউন্সিলর ফজলুর রহমান বলেন, প্রায় ২ একর জমির ওপর পশুহাটটি অবস্থিত। প্রতি হাটবারে ৪/৫ হাজার গরু বেচাকেনা হয়ে থাকে। হাটটি স্থাপিত হওয়ার পর আর জায়গা বাড়ানো হয়নি। যার কারনে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। হাটটির উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি পৌরসভার এগিয়ে আসা উচিত বলে তিনি দাবি করেন।
কেশবপুর পৌর মেয়র আব্দুস সামাদ বিশ্বাস বলেন, পৌরসভার মাসিক সভায় পশুহাটটির সংস্কার ও উন্নয়নের জন্য দ্রুত আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। যানজটের কথা বিবেচনা করে ওই হাটে দু’জন ট্রাফিক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাছাড়া রাস্তার পাশে রাখা যাবাহনগুলিকে সরিয়ে অন্যত্র রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামি এক মাসের মধ্যে পাশের জায়গা কিনে হাটটি সম্প্রসারন করা হবে, তখন আর কোন সমস্যা থাকবে না।

এসবিডি নিউজ ডেস্ক