আমরা কী ‘চুজ অ্যান্ড পিক’ নীতি অনুসরন করি?

আমরা কী ‘চুজ অ্যান্ড পিক’ নীতি অনুসরন করি?
ছবি: শওগাত আলী সাগর।

১.
সত্যিই বিচিত্র এই দেশ, তার চেয়েও বিচিত্র মানুষের মন! খুলনায় থানার ভেতর এক নারীকে ধর্ষন করেছে পাঁচ পুলিশ। থানার বড় কর্তা ওসিও ধর্ষকদের একজন। ধর্ষনের শিকার নারীটি মামলা করেছে বিচার চেয়ে। ওই ঘটনা নিয়ে আমরা কিন্তু তেমন একটা উচ্চবাচ্চ করিনি। এখনো করছি না। পুলিশের হাতে, ওসির হাতে ধর্ষিতা মেয়েটি ‘অন্য মামলায়’ জেলে আছে। ধর্ষকদের কিছুই হয়নি। এমনকি পর্যাপ্ত পরিমানে সামাজিক ঘূণাও তৈরি করতে পারেনি ঘটনাটি। কেন?

২.
শেয়ারবাজার দেশের হাজার হাজার মানুষ তাদের পুঁজি হারিয়েছে। কারসাজি আর দুর্নীতির মাধ্যমে শেয়ারবাজারে লুটপাটের ব্যবস্থা করে দিয়েছে খোদ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। সংস্থার চেয়ারম্যান, এক সময়কার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক খাইরুল হোসেন নিজেও দুর্নীতির সাথে জড়িত ছিলেন- প্রাথমিকভাবে এমন প্রমান পা্ওয়ার পর দুদক তার বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে। এটি নিয়ে মূলধারার মিডিয়ায় নিউজও হয়েছে। অথচ এটি নিয়েও আমাদের মধ্যে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। সোশ্যাল মিডিয়ায়ও খাইরুলের বিরুদ্ধে প্রবল সমালোচনা চোখে পড়েনি। তদন্ত চলাকালে খাইরুলকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়ার দাবিও তো তুলিনি।


৩.
কর্মচারীর সাথে জামালপুরের ডিসির (পারষ্পরিক সম্মতিতে) যৌনতা, ওসির নেতৃত্বে থানার ভেতর এক নারীকে গণধর্ষণের পর ‘ভিন্ন মামলায়’ তাকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে রাখা, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক- বিএসইসির চেয়ারম্যান খাইরুল হোসেনের নেতৃত্বে শেয়ারবাজার থেকে সাধারন মানুষের সর্বস্ব লুট করে নেয়া- এই তিনটি ঘটনার মধ্যে অপরাধ হিসেবে কোনটি বড় কিংবা কোনটি একেবারেই অপরাধ না? তিনটি ঘটনায় সমান প্রতিক্রিয়া হলো না কেন!

তা হলে কি ভিডিও দেখলেই আমাদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়! বরগুনার মিন্নির বানোয়াট সেক্স ভিডিও দেখেও যেমন প্রতিক্রিয়া হয়েছিলো ! প্রতিক্রিয়া, প্রতিবাদের জন্যও কি আমরা ‘চুজ অ্যান্ড পিক’ নীতি অনুসরন করি!

[লেখক: শওগাত আলী সাগর, নতুনদেশ ডটকম এর প্রধান সম্পাদক।।]

 

অতিথি লেখক