এশিয়াতে গণমাধ্যম ও সংবাদকর্মীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন এখন‌ নিয়মিত ঘটনাঃ সিপিজে

এশিয়াতে গণমাধ্যম ও সংবাদকর্মীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন এখন‌ নিয়মিত ঘটনাঃ সিপিজে

এসবিডি নিউজ24 ডট কম,ডেক্সঃ সরকার এবং বিভিন্ন জঙ্গি ও অপরাধী সংগঠনের নানামুখী চাপে সারা বিশ্বে মুক্ত সাংবাদিকতায় ঝুঁকি বাড়ছে বলে মনে করছে নিউইয়র্কভিত্তিক সংস্থা কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)। আর ইন্টারনেটভিত্তিক অপরাধ দমনে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আইন তৈরির উদ্যোগও সাংবাদিকতাকে বাধার মুখে ফেলছে বলে এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে সংগঠনটি। সারাবিশ্বে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে একটি জরিপের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার ‘অ্যাটাকস অন দি প্রেস’ শীর্ষক এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

সিপিজে বলছে, অপরাধ, মতানৈক্য ও দমন-পীড়নের খবর চাপা দেওয়ার জন্য সরকার ও অপরাধীদের পুরনো কৌশলের পাশাপাশি নতুন নতুন সব হুমকির মোকাবিলা করতে হচ্ছে সাংবাদিকদের। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্র সরকার গত বছর স্টপ অনলাইন পাইরেসি অ্যাক্ট (সোপা) ও প্রোটেক্ট ইন্টারনেট প্রোভাইডার অ্যাক্ট (পিপা) নামে দুটি আইন করার উদ্যোগ নেওয়ায় ‘মুক্ত সাংবাদিকতার’ চর্চাও ঝুঁকির মুখে পড়েছে। অবশ্য বিভিন্ন মহলের সমালোচনার মুখে কিছুদিন আগে ওই দুটি বিল স্থগিত করে বারাক ওবামা সরকার। আরও যাচাই বাছাইয়ের পর সেগুলো আবার কংগ্রেসে তোলার কথা রয়েছে।

সিপিজের নির্বাহী পরিচালক জোয়েল সিমন্স বলেন, “তথ্য অপ্রকাশিত থাকলে রাজনৈতিক অস্থিরতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা যে কোনো অনিয়মের ঘটনাও চাপা পড়ে যায়। তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে সেন্সরশিপ বিশ্বের যে কোনো জাতিগোষ্ঠীর জন্যই এক ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন। আমাদের জোরালোভাবে এর মোকাবিলা করতে হবে।”

সিপিজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরব বিশ্বের সাম্প্রতিক গণজাগরণে গণতন্ত্রের মুক্তির প্রত্যাশা জাগলেও দেশগুলোতে সাংবাদিকদের ঝুঁকি হঠাৎ করেই অনেক বেড়ে গেছে। এশিয়াতে গণমাধ্যম ও সংবাদকর্মীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন এখন‌ও নিয়মিত ঘটনা।

এ সংস্থার জরিপে দেখা গেছে, আফ্রিকায় অনুসন্ধানী প্রতিবেদনকে উন্নয়নের জন্য বাধা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। লাতিন আমেরিকায় রাষ্ট্রায়ত্ত্ব গণমাধ্যমকে ব্যবহার করা হয় মুক্ত গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে হাতিয়ার হিসেবে। শতাধিক দেশ ও আঞ্চলের তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে জানিয়ে সিপিজে বলেছে, ১৯৯২ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন দেশে অন্তত ১৫৬ জন সাংবাদিক হত্যার মামলা এখন‌ও অমীমাংসিত রয়েছে।

“গত কয়েক বছর ধরে পাকিস্তান সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হয়ে উঠেছে। ফিলিপাইনে ২০১০ সালে ৩২ জন সাংবাদিক হত্যার একটি মামলা সম্প্রতি আটকে দেওয়া হয়েছে। চীনে ব্লগারদের নিয়ন্ত্রণে বিনা বিচারে আটক ও ইন্টারনেটে কড়াকড়ি আরোপসহ নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে।” জরিপের তথ্য তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১১ সালে সারা বিশ্বে অন্তত ৪৬ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। কারাবন্দি হয়েছেন অন্তত ১৭৯ জন। এদিকে বাংলাদেশে সম্প্রতি খুন হওয়া সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে সংস্থাটির ওয়েব সাইটে লেখা হয়েছে, তারা ঘটনাটি তদন্ত করছে।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।