একরাম হত্যাকাণ্ডের ঘটনাঃ শিবলু’র স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

একরাম হত্যাকাণ্ডের ঘটনাঃ শিবলু’র স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

নিজস্ব প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি একরামুল হক একরাম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া মূল পরিকল্পনাকারী ফেনী পৌরসভার কাউন্সিলর ও পাঁচ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লা হিল মাহমুদ শিবলু স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক খায়রুল আমিনের কাছে ১৬৪ ধারায় ৫ জুন (বৃহস্পতিবার) এই জবানবন্দি দেন তিনি। দ্বিতীয় দফায় ৫ দিনের রিমান্ড শেষে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় তাকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে আদালত জবানবন্দি শেষে তাকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ফেনী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ জানান, ২ ঘণ্টাব্যাপী তার জবানবন্দি গ্রহণ করে আদালত। তবে মামলার তদন্তের স্বার্থে শিবলুর জবানবন্দি সম্পর্কে কোনো প্রকার তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে শিবলু পুরো ঘটনার পরিকল্পনা থেকে বাস্তবায়ন পর্যন্ত বিস্তারিত তুলে ধরেছে তার জবানবন্দিতে।

এদিকে উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হক একরাম হত্যাকাণ্ডের মূল হোতাদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে বৃহস্পতিবার উত্তাল ছিল ফেনীর ফুলগাজী। সকাল থেকে উপজেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থীরাসহ একরাম সমর্থকরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন। উপজেলার ফেনী-বিলোনিয়া, ফেনী-ফুলগাজী ও ফেনী-পরশুরাম সড়কে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের সামনে মানববন্ধন করেছে শিক্ষক-কর্মচারীসহ শিক্ষার্থীরা। নতুন মুন্সিরহাটে আয়োজিত মানবন্ধনে ফুলগাজী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাজী জামাল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম, যুবলীগের আহ্বায়ক গোলাম রাব্বানী। মানববন্ধনে ফুলগাজীর বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, ফুলগাজী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আশীষ কুমার, একরামুল হক একরামের বড় ভাই ও ফুলগাজী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হক নাসিম। মানববন্ধনে বক্তাদের অভিযোগ— উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হক একরামের হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা চিহ্নিত হলেও প্রশাসন তাদের গ্রেপ্তার করছে না। খুনিদের আড়াল করার জন্য ঘটনা অন্য খাতে প্রবাহিত করার পাঁয়তারা করছে প্রশাসন। তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আদেল, যুবলীগ নেতা জিয়াউল আলম মিস্টারসহ মূল হোতাদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবি জানান। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য দ্রুত চার্জশিট না দিয়ে সিআইডিতে হস্তান্তরের দাবি জানান তারা। এ সময় একরাম সমর্থকরা ফুলগাজী বাজার ও নতুন মুন্সিরহাট এলাকায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
উল্লেখ্য, গত ২০ মে ফেনী শহরের একাডেমি রোডস্থ বিলাসী হলের সামনে প্রকাশ্য দিবালোকে সন্ত্রাসীরা গুলি ও পুড়িয়ে হত্যা করে ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একরামুল হক একরামকে।

নিজস্ব প্রতিনিধি