তিনশ আসনেই প্রার্থী দেয়ার রোডম্যাপ তৈরি করছে জাপা

তিনশ আসনেই প্রার্থী দেয়ার রোডম্যাপ তৈরি করছে জাপা

এসবিডি নিউজ24 ডট কম,ডেস্ক: জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে এলেই ভোটের আলোচনায় সামনে থাকে জোট। জোটের বিষয়ে জাতীয় পার্টি প্রতিবারই চমক দেখাতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত কুলোতে পারে না। তবে এবার সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি কারও সঙ্গে নিজেদের জড়াতে চায় না। এমন প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। তবে জাতীয় পার্টি কারও সঙ্গে জোটবদ্ধ হবে না, এমন নিশ্চয়তা এখনই দিচ্ছেন না দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। তার ভাষ্য, জোট আরও পরের বিষয়। পরেরটা পরেই দেখা যাবে। আপাতত তা তালিকায় ভাবনায় নেই। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আরও বছরখানেক সময় বাকি। এর মধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলোর জোটের হিসাব-নিকাশ শুরু হয়েছে। এতদিন জোটের তেমন কদর না থাকলেও এখন তা বাড়ছে। ভোট সংখ্যার ওপর ভর রেখে চলছে জোট গঠনের আগাম প্রস্তুতি।

ভোটের রাজনীতিতে আলোচিত জাতীয় পার্টির একটি অংশ মনে করে দলের রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার পেছনে নিজের দলই নিয়ামক শক্তি। তবে পার্টির সবাই এতে একমত নন। তাদের বক্তব্য, রাজনৈতিক অবস্থা বুঝে বাস্তবিক সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। মুখে বলে জোট হয় না। আগে নিজেদের গ্রাউন্ড দেখতে হয়। সক্ষমতার বিষয়টি মাথায় নিয়ে এগোতে হবে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের সময়ের আলোকে বলেন, আমরা এখনই জোট নিয়ে ভাবছি না। নির্বাচনি রাজনীতির মেরুকরণ বুঝেই সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেব। কারণ এখন আমরা রাজনৈতিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছি। রাজনীতি কোন দিকে মোড় নেয়, তা দেখে জোটের সিদ্ধান্ত নেবে জাতীয় পার্টি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ প্রতিবারই জাতীয় পার্টির সঙ্গে জোট করে সরকার গঠন করেছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে দরকষাকষির জন্য আমাদের শক্তিটা বড় ফ্যাক্টর। নির্বাচনের ঠিক আগে আগে জোট নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে পার্টি। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সামরিক শাসন জারি করে ক্ষমতা দখলের পর ১৯৮৬ সালের ১ জানুয়ারি গঠন করেন জাতীয় পার্টি। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটে আছে জাপা। দলের প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর জাপার হাল ধরেন ছোট ভাই জিএম কাদের। যদিও নেতৃত্ব নিয়ে জিএম কাদের-রওশন দ্বন্দ্বও অনেক দূরই গড়ায়। তবে তা রাজনীতির মাঠে টেকেনি। রওশন এখন বিদেশে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। টানা তিন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট এবং সমঝোতা করেই নির্বাচন করেছে জাতীয় পার্টি। সবশেষ ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরে একাদশ সংসদ নির্বাচনে জোট করে নির্বাচন করেছিল জাতীয় পার্টি। ভোটে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের অন্যতম অংশীদার জাতীয় পার্টি আসন পায় ২২টি। ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ৩৫ বছর সময়ের মধ্যে প্রায় চার বছর জাতীয় পার্টির ক্ষমতায় থাকার ইতিহাস রয়েছে। পরবর্তী ৩১ বছর ক্ষমতায় যেতে না পারলেও ক্ষমতার নিয়ামক শক্তি হিসেবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে জাতীয় পার্টি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। আগামী নির্বাচনে কোন দিকে যাবে জাতীয় পার্টির?

এমন প্রশ্নে মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, তিনশ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার রোডম্যাপ তৈরি করছে জাপা। যদিও এখনই এর পুরো সক্ষমতা হয়েছে- তা বলব না। তবে গেল দুই বছর ধরে এ লক্ষ্যেই কাজ চলছে। নির্বাচনের আগে তার ফল পাওয়ার আশা মহাসচিবের। তিনি বলেন, আমরা ৩শ আসনে প্রার্থী সেট করার চেষ্টা চলিয়ে যাচ্ছি। সারা দেশে যাতে আমাদের শক্তি থাকে সেভাবে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। তিনি জানান, আগামী ১০ মার্চ জেলায় জেলায় বর্ধিত সভা হবে। পার্টির দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক নেতারা এসব বর্ধিত সভা সফল করবেন। নির্বাচনের আগে পার্টিকে শক্তিশালী করার সঙ্গে জনসম্পৃক্ততাও বাড়াতে চান চুন্নু। জাতীয় পার্টির একজন নেতা জানান, তাদের ছাড়া আওয়ামী লীগ কোনো সময় ক্ষমতায় আসতে পারেনি। মোটামুটি তাদের সঙ্গে নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। তিনি বলেন, যে সময় আমরা ওনাদের সঙ্গে ছিলাম না সে সময় ওনারা ক্ষমতায় আসতে পারেননি। এ জন্য আমরা যাকে যখন সমর্থন দেব, তারাই সরকার গঠন করতে পারে।

তিনি এ-ও বলেন, নির্বাচনের ঠিক আগে প্রশ্ন আসে আমরা বিএনপিকে সমর্থন দেব না আওয়ামী লীগকে দেব। সেই জায়গায় আমাদের কিছু লোক বিএনপিকে দিতে চায় আবার কিছু লোক আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিতে চায়। এ নিয়েও অনেকের মধ্যে বিভ্রান্তি আছে। জোটের বিষয়ে পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম পাটোয়ারী বলেন, পার্টি থেকে আমাদের এসব নিয়ে বলতে বারণ আছে। জোট নিয়ে ব্যক্তি পর্যায়ে বলার সুযোগ নেই। সব বলবেন মহাসচিব ও চেয়ারম্যান।

এসবিডি নিউজ ডেস্ক