অপরাধ করে গ্রেফতার হয়েছিলেন মিররের সাংবাদিক সাইমন রাইট

অপরাধ করে গ্রেফতার হয়েছিলেন মিররের সাংবাদিক সাইমন রাইট

শওগাত আলী সাগরঃ আলৌকিক কন্যা রেশমার কাহিনীকে ‘জালিয়াতি’ হিসেবে প্রমানের চেষ্টাকারী লন্ডনের তথাকতিথ ‘অনুসন্ধানী’ সাংবাদিক সাইমন রাইট  অপরাধ করে  নিজেই আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় শিরোনাম হয়েছিলেন। মন্দ সাংবাদিকতার জন্য দক্ষিন আফ্রিকায় তিনি গ্রেফতার হয়ে বহিষ্কৃত হন।২০১০ সালে দক্ষিন আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট চলাকালে এই ঘটনা ঘটে। সে সময় তার কর্মকান্ডকে ‘কু-সাংবাদিকতা’ হিসেবে অভিহিত করা হয় বিভিন্ন মহলে।

উল্লেখ্য,সাভারের রানা প্লাজার ধ্বংস স্তুপ থেকে ১৭ দিন পর উদ্ধার হওয়া রেশমার কাহিনীকে ‘জালিয়াতি’ হিসেবে অভিহিত করে গত রোববার লন্ডনের  ট্যাবলয়েড পত্রিকা ‘মিরর’ এ একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনটি লিখেছেন মন্দ সাংবাদিকতার জন্য শাস্তি পাওয়া সাইমন রাইট। এর আগে ঢাকা থেকে প্রকাশিত জামাত-বিএনপি সমর্থক দৈনিক আমারদেশ এই খবরটি প্রকাশ করে। মিরর এর খবরটি মূলত: আমারদেশ এর রিপোর্টেরই ইংরেজী সংস্করন।

মিরর রিপোর্টটিকে অনুসন্ধানী  প্রতিবেদন হিসেবে দাবি করলেও  রিপোর্টটিতে বেনামি একজন গার্মেন্ট শ্রমিককের দাবির ভিত্তিতেই করা হয়েছে। এর বাইরে রিপোর্টটিতে অনুসন্ধানের কোনো আলামত নেই।

এই  রিপোর্টের রিপোর্টার সাইমন রাইট  সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য পাওয়া যায়। তার বিরুদ্ধে ‘নিউজ তৈরির’ জন্য অর্থের লেনদেন এবং টাকা পয়সার বিনিময়ে কাহিনী বানিয়ে তা পত্রিকায় প্রকাশ করার অভিযোগ রয়েছে। এই ধরনের ঘটনা ঘটাতে গিয়ে তিনি দক্ষিন আফ্রিকায় গ্রেফতার হয়ে দেশ থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন।

প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ২০১০ সালে দক্ষিন আফ্রিকায় প্রথম বারের মতো অনুষ্ঠিত হয় বিশ্বকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট। ওই টূর্নামেন্টে আলজেরিয়ার সাথে একটি ম্যাচে ইংল্যান্ড ০-০ গোলে ড্র করে।ওইদিনই পাবলোস জোসেফ নামে এক তরুন ইংল্যান্ড টীমের ড্রেসিং রুমে  ঢুকে পড়ে এবং ইংল্যান্ড টীমের ক্যাপ্টেন ডেভিড ব্যাকহামের সঙ্গে খারাপ আচরন করে।ক্যাপটাউন পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।তার একদিন পরই ক্যাপটাউন ইন্টারন্যাশনাল এযারপোর্ট থেকে গ্রেফতার হয় ‘মিরর’ এর সাংবাদিক সাইমন রাইট।

আদালতে দায়ের করা ক্যাপটাউন পুলিশের ভাষ্যে  বলা হয়েছে, সাইমন রাইট নাম ঠিকানা গোপন করে  বৃটিশ তরুন জোসেফের জন্য হোটেলের রুম বুকিং দেয়। সেখানেই পরিকল্পনা করে জোসেফকে ইংল্যান্ড টীমের ড্রেসিং রুমে পাঠিয়ে দেয়। পুলিশের ভাষ্য, সাইমনের লক্ষ্য ছিলো দক্ষিন আফ্রিকার মতো একটি দেশে বিশ্বকাপের  আয়োজনে নিরাপত্তার ত্রুটির প্রশ্ন তুলে বিশ্বকাপে অংশগ্রহনকারীদের মধ্যে চাপ সৃষ্টি করে। ঘটনাটি সৃস্টি এবং পরবর্তীতে এক্সক্লসিভ ইন্টারভিউর জন্য জোসেফকে ৩৫  হাজার পাউন্ড দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেয় সাইমন রাইট।

এয়ারপোর্ট থেকে গ্রেফতারের পর সাইমন রাইটের পাসপোর্ট  কেপটাউন পুলিশ তার পাসপোর্ট জব্দ করে এবং প্রতিদিন পুলিশের কাছে হাজিরা দেওয়ার শর্তে জামিন দেয়। তবে তাকে বিশ্বকাপ এলাকায় অবাঞ্চিত ঘোষনা করা হয়। আদালতে বিচারে জোসেফকে জরিমানা করা হয় এবং সাইমন এর বিরুদ্ধে বিচারকার্য শুরু হয়। পরে অবশ্য দক্ষিন আফ্রিকা সরকার তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাহার করে তাকে দেশ থেকে বহিষ্কার করে।  স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের ইস্যূ করা এক প্রেসনোটে এই বহি:ষ্কারাদেশের ঘোষনা জানিয়ে বলা হয়,সাইমন রাইটকে দক্ষিন  আফ্রিকায় অনাকাঙ্খিত ব্যক্তি হিসেবে ঘোষনা করা হয়।

শওগাত আলী সাগরঃ প্রধান সম্পাদক,নতুনদেশ ডট কম।।

অতিথি লেখক