জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাকের অবৈধ বাণিজ্য বন্ধ করা জরুরি

জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাকের অবৈধ বাণিজ্য বন্ধ করা জরুরি

নিজস্ব প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ তামাকজাত দ্রব্যের অবৈধ বাণিজ্য বন্ধ এবং আসন্ন বাজেটে সিগারেটের প্যাকেটের মূল্য ৩৫ টাকা ও বিড়ির প্যাকেটের সর্বনিম্ন মূল্য ১০টাকা নির্ধারণক করে তারউপর কর বৃদ্ধির আহবান জানিয়ে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট। আসন্ন ৩১ মে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ২০১৫ সামনে রেখে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট, জাতীয় যক্ষা নিরোধ সিমিতি (নাটাব) এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট এর যৌথ উদ্যোগে আজ সকালে ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

নাটাব এর সিনিয়র সহ-সভাপতি ও বিশিষ্ট সমাজকর্মী মোজাফফর হোসেন পল্টুর সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট এর সমন্বয়কারী সাই্ফুদ্দিন আহমেদ ও  নাটাবের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব খায়ের উদ্দিন আহমেদ মুকুল। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সেক্রেটারী জেনারেল হেলাল আহমেদ ও সঞ্চালনা করেন নিরাপদ ডেভলপমেন্ট ফাউন্ডেশন এর নির্বাহী পরিচালক ইবনুল সাইদ রানা।
লিখিত বক্তব্যে হেলাল আহমেদ বলেন, বিড়ি, সিগারেট, জর্দা, গুলসহ সবরকম তামাকের সর্বনিম্ন মূল্য নির্ধারণ, সাদাপাতা বা খোলা তামাকপাতা বিক্রি নিষিদ্ধ করা, সব তামাকজাত দ্রব্যকে মোড়কের আওতায় আনা ও আইন অনুযায়ী বাংলায় লিখিত স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রদানে বাধ্য করা, সিগারেটসহ তামাকজাত দ্রব্যের চোরাচালানের উৎস চিহ্নিত, চোরাচালানকৃত তামাকজাত দ্রব্য প্রকাশ্য ধ্বংস করে তার সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশ ও চোরকারবারীদের আটকসহ শাস্তি প্রদান এবং তামাকজাত দ্রব্যের উপর আরোপিত স্বাস্থ্যকর জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে পরিকল্পিত উপায়ে ব্যয় নিশ্চিত করতে থাইল্যান্ডসহ অন্যান্য দেশের আলোকে হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার সুপারিশ জানানো হয়।
সাই্ফুদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রতিবছর নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন জিনিসের দাম বাড়ছে। বাজারে একটি কলার মূল্য ৪ টাকা,  কিন্তু  ক্ষতিকর একটি সিগারেটের মূল্য মাত্র ১.৫ টাকা। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের চেয়ে সিগারেটের মূল্য অনেক কম। এ কারনে অনেকে ধূমপানের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। যা জনগণের স্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
তিনি আরও বলেন, ৩১ মে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে “Stop illicit trade of tobacco products”, বাংলায় ভাবানুবাদ করা হয়েছে ‘তামাকজাত দ্রব্যের অবৈধ ব্যবসা বন্ধ কর’। বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের সঙ্গে যুক্ত সংস্থাসমূহ এ বছরও দেশের ৬৪ জেলায় র‌্যালি, আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উদযাপন করবে। ইতোমধ্যে জোটভূক্ত সংগঠনগুলো এরকম পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
মোজাফফর হোসেন পল্টু বলেন, সিগারেটের সর্বনিম্ন মূল্য ৩৫ টাকা এবং বিড়ির সর্বনিম্ন মূল্য ১০টাকা করে তারপর ৭০% কর ধার্য করা উচিত। এতে বিড়ি ও সিগারেটের প্রকৃত মূল্য বাড়বে, যা মানুষকে এ নেশাদ্রব্য ক্রয়ে নিরুৎসাহিত করবে। পাশাপাশি গুল, জর্দারও সর্বনিম্ন মূল্য বাড়িয়ে কর ধার্য করতে হবে। এমনভাবে সর্বনিম্ন মূল্য ধার্য করতে হবে, যেন প্রকৃত মূল্য কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায় এবং মানুষ এসব নেশা দ্রব্য ক্রয়ে নিরুৎসাহিত হয়। তিনি আরো বলেন, তামাকজাত দ্রব্যের উপর করহার তুলনামূলক বিচারে কম হলেও ক্ষতিকর এসব পণ্যের উপর আলাদাভাবে স্বাস্থ্যকর আরোপ করার পদক্ষেপ বৈশ্বিক পরিমন্ডলে প্রশংসিত হয়েছে। তামাক নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ অনেক পদক্ষেপই বিশ্বে অনুকরণীয়। স্বাস্থ্যকর হিসাবে গৃহিত অর্থের সঠিক ব্যবহারের পদক্ষেপ বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান আরো সুসংহত করবে। এক্ষেত্রে হেলথ প্রমোশন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠাই একমাত্র যৌক্তিক সমাধান হিসাবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

বক্তারা বলেন, আইন অনুযায়ী বাংলায় সতর্কবাণী ব্যতিত দেশে কোন সিগারেটে বিক্রয় নিষিদ্ধ। কিন্তু ঢাকাসহ সর্বত্র বিদেশী সিগারেট পাওয়া যায়। এসব অবৈধ সিগারেটের উৎস কোথায়? এতে একেিদক কর ফাঁকি দেয়, অন্যদিকে অবৈধ ব্যবসার মাধ্যমে অর্জিত অর্থ অবৈধ কাজে ব্যয় হয়, যাতে রাষ্ট্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাই সিগারেটের অবৈধ ব্যবসা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার।

নিজস্ব প্রতিনিধি