৭ মার্চঃ বিএনপি-জামায়াত এর সকাল-সন্ধ্যা হরতাল!

৭ মার্চঃ বিএনপি-জামায়াত এর সকাল-সন্ধ্যা হরতাল!

নিজস্ব প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ বিএনপির সমাবেশে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে ৭ মার্চ (বৃহস্পতিবার) সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে বিএনপি। পরে জামায়াতও হরতাল পালনের ঘোষণা দেয় দলীয়ভাবে। ৬ মার্চ (বুধবার) বিকেলে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ পণ্ড ও পুলিশের গুলিতে নেতাকর্মীরা আহত হওয়ার পর তাৎক্ষণিক ব্রিফিং করে এ কর্মসূচি ঘোষণা দেন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘পূর্বপরিকল্পিতভাবে পুলিশ ও র‌্যাবের সঙ্গে এ হামলায় অংশ নেয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের ক্যাডার বাহিনী। তারা বিভিন্ন গলির ভেতর থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর গুলি চালায়।’

ব্রিফিং-এ মির্জা ফখরুল তার লিখিত বক্তৃতায় বলেন, ‘গত কয়েকদিনে সারাদেশে সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সশস্ত্র যুবলীগ, ছাত্রলীগের হত্যা, নির্যাতন, উৎপীড়ন, মামলা, হামলা ও গণগ্রেফতারের প্রতিবাদে বিএনপির ডাকে বুধবার ঢাকাসহ দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। ঢাকা মহানগরীতে দলের নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। আমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা বক্তব্য রাখার পর সভার শেষ পর্যায়ে আকস্মিকভাবে বিনা উসকানিতে পুলিশ-র‌্যাব সমাবেশের ওপর উন্মত্তের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে। পুলিশ-র‌্যাবের পাহারায় আওয়ামী যুবলীগ-ছাত্রলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরাও আজকের এ হামলায় অংশগ্রহণ করে। তারা বিভিন্ন গলি থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে ও বোমা নিক্ষেপ করতে থাকে।’ সমাবেশকে লক্ষ্য করে ফকিরাপুল মোড় এবং নাইটিংগেলের মোড় দুই দিক থেকে পুলিশ আমর্ড কার থেকে গুলি ছুড়তে ছুড়তে সভার মঞ্চের দিকে এগিয়ে আসে। এরই সঙ্গে পুলিশ-র‌্যাব বিএনপি নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে অবিরাম টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করতে থাকে। মুহূর্তের মধ্যে গোটা এলাকাটিতে এক বিভীষিকাময় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হয়।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পুলিশের গুলিতে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, অর্থনীতিবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবদুস সালাম, যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীসহ প্রায় দেড় সহস্রাধিক নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন।’ তিনি বলেন, ‘আপনারা এখনও নিশ্চয়ই লক্ষ্য করছেন, গোটা এলাকাটি রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। রণসজ্জায় সজ্জিত পুলিশ-র‌্যাব শান্তিপূর্ণ সমাবেশে নিরস্ত্র মানুষের ওপর সশস্ত্র অবস্থায় ঝাঁপিয়ে পড়ে সরকারের গণতন্ত্রের একটি নমুনা প্রদর্শন করলো।’  ফখরুল বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন আওয়ামী গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্যগুলি প্রত্যক্ষ করছি। গণহত্যা, গুম, গুপ্তহত্যা, অপহরণ, বীভৎস নির্যাতন এবং মামলা-হামলা নির্ভর এ সরকার। বর্তমান শাসকগোষ্ঠী জনগণের স্বার্থ এবং তাদের জানমালের  তোয়াক্কা করে না। তারা রাষ্ট্রকে এক ভয়ঙ্কর অত্যাচারের যন্ত্র বানিয়ে বিরোধী মতকে নিষ্ঠুরভাবে দমন করার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও অত্যাচারের যাঁতাকলে প্রতিনিয়ত পিষ্ট করছে। এরা দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে। এরা ফ্যাসিবাদের বিষাক্ত থাবায় সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছে। সর্বব্যাপী দুর্নীতি, লুটপাট এবং দখলের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে হত্যা এদের নিত্যদিনের খেলা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন কঠিন এবং চূড়ান্ত প্রতিরোধে এদের পতন ঘটানো ছাড়া মানুষের আর কোনো উপায় নেই। আর ফিরে দেখার কিছু নেই।’  গণতন্ত্রকামী মানুষের কাছে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন দেশের সর্বত্র নিশ্ছিদ্র ব্যারিকেড গড়ে তুলতে হবে। এ রক্ত পিপাসু সরকারের আজকের নারকীয় তাণ্ডবের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সারাদেশে বিএনপির ডাকে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হবে।’

নিজস্ব প্রতিনিধি