সময় হলেই মহাজোট থেকে বেরিয়ে যাবঃ এরশাদ

সময় হলেই মহাজোট থেকে বেরিয়ে যাবঃ এরশাদ

কাজী মাহফুজুর রহমান শুভ,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ  জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, আমাকে কেউ কারাগারে নিতে পারবে না। কারোর ক্ষমতা নেই আমাকে বন্দী করে রাখার। জেলে যাওয়ার ভয়ে মহাজোট ছাড়তে পারছি না, এটি ভুল। আমি জেলে যেতে ভয় পাই না। সময় হলেই মহাজোট থেকে বেরিয়ে যাব। ৬ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) সংবিধান সংরক্ষণ দিবস উপলক্ষে রাজধানীর গুলশানে ইমানুয়েলস কনভেনশন সেন্টারে এ আলোচনা সভার আয়োজিত ঢাকা মহানগর উত্তর জাতীয় পার্টি আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর তীব্র আন্দোলনের মুখে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে বাধ্য হন। এর মধ্য দিয়ে তার নয় বছরের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটে। এরপর থেকে ৬ ডিসেম্বরকে জাতীয় পার্টি ‘সংবিধান সংরক্ষণ দিবস’ হিসেবে পালন করে। কিন্তু অন্য রাজনৈতিক দলগুলো দিনটিকে গণতন্ত্র মুক্ত দিবস হিসেবে পালন করে। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ সামরিক আইন জারি করে ক্ষমতা দখল করেন এরশাদ। তখন তিনি সেনাপ্রধান ছিলেন।

এরশাদ বলেন, আমার ক্ষমতা গ্রহণের ইচ্ছা ছিলো না। বিচারপতি ছাত্তারের অনুরোধে ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলাম। আমার জনপ্রিয়তার ভয়ে সংবিধান সংশোধন করে সংসদীয় সরকার পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। আমি চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি, সাহস থাকলে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার পদ্ধতি প্রবর্তন করুন। এরশাদ আরও বলেন, আপনারা তিন দল একজোট হয়েও আমার বিজয় ঠেকাতে পারবেনা না। আমি আরেকবার ক্ষমতায় যেতে চাই। তবে তা ক্ষমতার মোহে নয়, দেশ উদ্ধারের জন্য। আরেকবার সুযোগ পেলে উন্নয়নের মাধ্যমে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের উপর অন্যায়ের প্রতিশোধ নিতে চান বলে জানান এরশাদ। ক্ষমতায় গেলে প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা বাস্তবায়ন ও নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতির প্রয়োজন হবে না। সরকারের সমালোচনা করে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন, সরকার সবকিছুতে ষড়যন্ত্র খোঁজে। দেশে দুর্নীতি ছেয়ে গেছে সেদিক তাদের নজর নেই। রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তিনজন প্রার্থীকে দাঁড় করে দেয়া হয়। সে কারণে তিনি কাউকেই মনোনয়ন দেননি।

আলোচনা সভায় ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ১৯৯০ সালে সেনা অভ্যুত্থান ঠেকাতেই জাতীয় পার্টি ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছিল। আর এর মাধ্যমে সংবিধান সংরক্ষণ করা হয়েছে। এছাড়া আলোচনায় অংশ নিয়ে অন্য বক্তারা বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ কাউকে হত্যা করে ক্ষমতা দখল করেনি। ঐ সময়ে দেশে দুর্নীতি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হলে দেশ রক্ষার জন্য এরশাদকে ক্ষমতা দেয়া হয়। ’৯০ সালে রাজনৈতিক দলগুলো দেশে হরতালসহ ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি পালন করতে থাকে। তখন দেশের সংবিধান রক্ষার জন্য স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ছেড়ে দেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। মহানগর উত্তর জাতীয় পার্টির সভাপতি এসএম ফয়সল চিশতীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যস ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহম্মদ, জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার।
এছাড়া অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন- জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য এমএ ছাত্তার, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান, এম হান্নান, জিয়াউদ্দিন আহম্মদ বাবলু, অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম, সুনীল শুভরায়, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু প্রমুখ।

নিজস্ব প্রতিনিধি