সাতক্ষীরা সীমান্তে গরুর খাটাল চাদা নিয়ে সংঘষের আশঙ্কা

সাতক্ষীরা সীমান্তে গরুর খাটাল চাদা নিয়ে সংঘষের আশঙ্কা

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ সাতক্ষীরার সীমান্তে গরুর খাটাল দখল ও গরু চোরাকারবারিদের কাছ থেকে চাঁাদা আদায়কে কেন্দ্র করে বর্তমান খাটাল মলিক ও নতুন খাটাল মালিকরা মুখোমুখি অবস্থান করছে। অবৈধভাবে আদায়কৃত লক্ষ লক্ষ  চাঁদার  ভাগ পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তারা। যে কোন সময় দুই পক্ষের মধ্যে বড় ধরনের সংঘ©র্ষর আশংকা করা হচেছ।

সুত্র মতে, ভারত থেকে গরু নিয়ে এসে প্রথমে কালীগঞ্জের বসন্তপুর, দেবহাটার কুলিয়া, সদরের সাতানি ও কলারোয়ার সোনাবাড়িয়ার করিডোর এলাকায় রাখা হতো। করিডোরের ভ্যাট দিয়ে গরু দেশের ভিতরে ঢোকানো হতো। সম্প্রতি করিডোরে বন্ধ করে  সীমান্তের শাখরা, ভোমরা, গাজিপুর, ঘোনা, বৈকারী, তলুইগাছা, কাকডাঙ্গা ও চান্দুড়িয়া সীমান্ত এলাকায় অবৈধ গরুর খাটাল তৈরি করা হয়।

ভারত থেকে চোরাই পথে গরু  নিয়ে এসে রাখা হয় খাটালে। গরু প্রতি ৫শ’ টাকা করে রাজস্ব আদায় করা হয়। খাটাল ঘিরে গড়ে চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট সদস্যরা গরু থেকে এক থেকে দেড় হাজার টাকা আদায় করছে। এই টাকার ভাগ হয় বিজিবি, কথিত সাংবাদিক, পুলিশ ও স্থানীয় সিন্ডিকেট সদস্যদের মধ্যে।  এর একটি মোটা অংকের টাকা চলে আসে সাতক্ষীরা শহরের কিছু রাজনীতিকের পকেটে।

বর্তমানে ঘোনা এলাকায় স্থানীয় চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় খাটালে টাকা আদায় করছে হাবিব। গরু প্রতি আদায় করা হচেছ ১১’ থেকে ১২শ’ টাকা। বর্তমানে টাকা আদায় করার জন্য খাটাল নিয়েছে কালাম। বৈকারিতে আরশাদ আলী খাটাল থেকে গরু প্রতি ১২শ থেকে ১৩শ টাকা আদায় করেছে। এখানে টাকা তোলার জন্য আওয়ামীলীগ নেতা অছলে মেম্বার নতুন খাটাল তৈরি করেছেন। গাজিপুর, খাটলে গরুর টাকা আদায় করে সন্তোষ। এখানে গরু প্রতি আদায় করা হচেছ ১১শ থেকে ১২শ টাকা। এখানে টাকা আদায় করার জন্য নতুন খাটাল তৈরি করেছে শহিদুল। কুশখালি খাটালে টাকা আদায় করেছে গোলাম মোরশেদ। সবচেয়ে বেশি টাকা আদায় করা হচেছ এখানে গরু প্রতি ১৩-১৪শ’ টাকা। এখানে নতুন খাটলের আবেদন করেছে ওই গ্রামের আবুল বাসার। তলুইগাছা খাটালে আব্দুল খালেক ১ হাজার থেকে ১১ টাকাআদা করছে। এখানে খাটাল তৈরি করেছে রুহুল আমিন। কাকডাঙ্গায় ইয়ার আলী ১ হাজার থেকে ১১ গরু থেকে টাকা তুলছে। এখানে নতুন খাটাল তৈরি করছে জালাল। অতিরিক্ত চাঁদার টাকা পুলিশ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, কথিত সাংবাদিক, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা ভাগাভাগি করে নিচেছ।  দিনের পর দিন গরু থেকে চাঁদা আদায় করা হলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হচেছ না। ফলে তারা বেপোরোয়া হয়ে উঠেছে।

গ্রামবাসিরা জানায়, সীমান্তে গরু থেকে অতিরিক্ত চাঁদা আদায় ও ভারত থেকে গরু নিয়ে আসাকে কেন্দ্র করে সীমান্ত অশান্ত হয়ে উঠেছে। গরু আনতে যেয়ে বিএসএফের গুলিতে নিহত ও আহত হচেছ অনেক বাংলাদেশি। বিএসএফ সদস্যরা অনেকের হাত-পা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিচেছ। রাতে ও দিনে সীমান্তে গুলি বর্ষন করছে তারা। বিজিবি’র পক্ষ থেকে গুলিতে নিহত ও আহত হওয়ার ঘটনায় প্রতিবাদ জানানো হচেছ। কিন্ত বিএসএফ সীমান্তে গুলি বন্ধ করছে না্ । বরং বেড়ে চলেছে। আবার গরু নিয়ে অনেক ভারতীয় সীমান্ত পার হয়ে এদেশে আসছে। অপরদিকে নতুন খাটাল মালিক ও পুরাতন খাটাল মালিকরা বর্তমানে মুখোমুখি অবস্থান করছে। চাঁদার ভাগ ও চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র করে যে কোন সময় বড় ধরনের সংর্ষঘের আশংকা করা হচেছ।বিএসএফের অপতৎপরা ও খাটালে চাঁদা আদায়কে নিয়ে সীমান্তের আইন শৃংখলা অবনতি ঘটেছে।

সাতক্ষীরা ৩৮বিজিবি ব্যাটলিয়নের অধিনায়ক লে; কর্ণেল আবু বাছির জানান, সম্প্রতি বিএসএফের হাতে এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে নি জন বাংলাদেশি। এসব ঘটনায় তারা প্রতিবাদ জানিয়ে বিসেএফকে চিঠি দেওয়া হয়। তার পরও সীমান্তে তারা গুলি বন্ধ করছে না।

সবমিলিয়ে গরুর খাটাল নিয়ে দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। গরুর খাটলে চাঁদা তুলাকে কেন্দ্র করে যে কোন সময় সীমান্তে বড় ধরনের সংঘর্ষ হতে পারে। ঘটতে পারে বড় ধরনের আইন শৃংখলার অবনতি। বিষয়টি তিনি ইতিমধ্যে উর্দ্ধতন কর্তপক্ষকে জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন।

এসবিডি নিউজ ডেস্ক