১০ জনকে স্বাধীনতা পদক দিয়ে সম্মানীত করা হয়েছে

১০ জনকে স্বাধীনতা পদক দিয়ে সম্মানীত করা হয়েছে

মোক্তার হোসেন,এসবিডি নিউজ 24 ডট কমঃ স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য ১০ জনকে স্বাধীনতা পদক দিয়ে সম্মানীত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার সকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মনোনীতদের হাতে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ এই পদক তুলে দেন। পদকের জন্য মনোনীতরা প্রত্যেকে ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের ৫০ গ্রাম ওজনের একটি মেডেল, দুই লাখ টাকা এবং সম্মাননা পত্র পেয়েছেন। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার দুই নম্বর আসামী শহীদ লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মোয়াজ্জেম হোসেন এবং সিরাজগঞ্জে প্রতিরোধ যুদ্ধের সংগঠক মহকুমা প্রশাসক শহীদ আবুল কালাম শামসুদ্দিন ২০১২ সালের মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক পান। একই ক্ষেত্রে অবদানের জন্য আরও পুরস্কার পান, চাঁদপুরে মুক্তিবাহিনীর চিকিৎসকের দায়িত্ব পালনকারী মুক্তিযোদ্ধা ডা. সৈয়দা বদরুন নাহার চৌধুরী এবং মুক্তিযোদ্ধা নয়ীম গহর। সাংবাদিকতায় দৈনিক সংবাদের সাবেক সম্পাদক বজলুর রহমান স্বাধীনতা পুরস্কার (মরণোত্তর) পান। তিনি মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন। শিক্ষাক্ষেত্রে নজরুল গবেষক অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম এই পুরস্কার পান। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বন্দিশিবিরে আটক ছিলেন। সাহিত্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য আবুল ফজল মরণোত্তর পুরস্কার পান। চিকিৎসাবিদ্যায় পুরস্কার পান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত। তিনি ভারতে প্রশিক্ষণ নিয়ে সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। গবেষণা ও প্রশিক্ষণক্ষেত্রে কৃষিবিজ্ঞানী ড. কাজী এম বদরুদ্দোজা এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী পদার্থবিদ ড. কামরুল হায়দার স্বাধীনতা পদক পেয়েছেন। ডা. সৈয়দা বদরুন নাহার চৌধুরী, নয়ীম গহর, প্রাণ গোপাল দত্ত, মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, কাজী এম বদরুদ্দোজা এবং কামরুল হায়দার প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার নেন। মোয়াজ্জেম হোসেনের পক্ষে তার স্ত্রী কোহিনূর মোয়াজ্জেম হোসেন পুরস্কার নেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মোয়াজ্জেম হোসেনকে হত্যা করা হয়।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে বন্দি অবস্থায় ঢাকা সেনানিবাসে শহীদ আবুল কালাম শামসুদ্দিনের পক্ষে তার ছেলে আবুল কালাম সালাউদ্দিন প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে স্বাধীনতা পুরস্কার নেন। আবুল ফজলের পক্ষে তার মেয়ে মমতাজ জাহান প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার নেন। বজলুর রহমানের পক্ষে তার স্ত্রী আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী এই পুরস্কার নেন।

স্বাধীনতা পুরস্কার দেয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে সবার সহায়তা চেয়ে বলেন, এই বিচার না হলে দেশ অভিশাপমুক্ত হবে না। তিনি তার বক্তব্যের শুরুতেই স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আমি অত্যন্ত আনন্দিত। এ বছর যারা স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন, তারা মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখার পাশাপাশি, দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও অবদান রেখে যাচ্ছেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্যসহ সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নিজস্ব প্রতিনিধি

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।