কে ঐ বাজায় বাঁশী?

কে ঐ বাজায় বাঁশী?
ফারহিম ভীনা: স্বপ্নের যেমন শেষ নেই তেমনি শেষ নেই বাস্তবরেরও। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হলে বুঝতামই না সে অসীম আশ্চর্য বাস্তবতাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি অথচ ক্লাস হচ্ছে না-ভর্তি হওয়ার সাথে সাথে টানা এগারো মাস বন্ধ। শুনলাম একে এরশাদ ভ্যাকেশন বলে। গণতন্ত্রের জন্য ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের রাউফুন বসুনিয়া প্রাণদাঁন করে ইতিহাস হয়েছেন | ঠিক ক্লাস শুরুর আগে ছাত্র সংঘর্ষের জেরে গুলীবিদ্ধ হয়ে মারা যায় ৩ জন।এক অদ্ভুত সময় তখন। ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হতে না হতে শুনলাম ‘সাইন-এ-ডাই’। যখন তখন ভার্সিটি বন্ধ হচ্ছে-উত্তাল হচ্ছে ক্যাম্পাস। তখন যেন গাছে ফুলের বদলে ফুটছে আগুনের ফুলকি। ছাত্র ছাত্রীদের হল ছাড়ার ছবি ছাপা হচ্ছে খবরের কাগজে।
ভর্তি হয়েই প্রায় এক বছর বন্ধ |আমরা হা পিতেস হয়ে বসে যাচ্ছি কবে ক্লাস শুরু হবে।অপেক্ষায় সব খারাপ লাগে –মনে হলো সেবছর এমন শীতকাল নামল যেন উত্তর গোলার্ধের সব ঠান্ডা আমাদের আগারগাঁও এর মাঠে আর এমন বর্ষাকাল নামে যেন চরাচর আচ্ছন্ন করে দিগন্তজোড়া হাহাকার নিয়ে বৃষ্টির সাথে নামে। এরই মধ্যে কখন যেন আবিষ্কার করি আমরা চাঁদের সাথে পাল্লা দিয়ে বড়ো হয়ে উঠছি- আমরা কবিতা ভালবেসে বড় হয়ে উঠছি। কোন কবিতায় পড়েছিলাম ‘বড়ো সব মঞ্চে ওঠে –বড়ো বড়ো অভিনেতা মুখ/ ও সময়ে খুব বেশি গীতবাদ্য নয়/ আলো থাকে ভীষণ জোরালো/ মঞ্চ জুড়ে দাপিয়ে বেড়ায় ওরা/ সজ্জিত সিংহাসনও থাকে।’ কবিতার সেইসব উজ্জ্বল চকমকে আলোর পাশে শ্যাওলা ধরা নোনা কলোনী বাড়িতে থাকে নীরব সব মানুষ। সেইসব নীরব মানুষরা একদিন হাঁটতে হাঁটতে রুপকথার শহরের সবচেয়ে বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখে। ভর্তি হয়েছি সাংবাদিকতা বিভাগে। সাংবাদিকতা পড়ার কি আছে ? ওটা কোন মৌলিক বিষয় নয়। বাবার কঠিন মতামতের পরও আমি বিদ্রোহ করি। প্রথা ও পিতার সাথে তর্ক করে ভর্তি হলাম সাংবাদিকতা বিভাগে |
ভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে দেখি চারিদিকে কেমন সৌরভ মাঠে, ময়দানে, টিএসসিতে, সেমিনার রুমে। কবিতার মত ক্যাম্পাস, সে ক্যাম্পাসে আমরা নতজানু প্রার্থনার মত ডুব দেই-দেখি ঝকঝকে প্রাণবন্ত ফুলার রোড, হানিফ চত্বর, টিএসসি, মধুর ক্যান্টিন, লাইব্রেরি, ঐ যে বটতলা সব আমাদের। আহ্ ক্যাম্পাস। বিশাল ক্যাম্পাস আমাদের। কিন্তু হাজার জনের মাঝে আমরা পরিচিত হয়ে উঠছি- ওরা এগারো জন হিসেবে। আমরা একসাথে ক্লাস করছি আবার জারুল আর কৃঞ্চচূড়ায় ছাওয়া কলাভবন তোলপাড় করে ঘুরে বেড়াই। আমাদেরকে একসাথে সর্বক্ষণ থাকতে দেখে আমাদের দু’বছরের বড় রেজাভাই ( নক্ষত্র সাংবাদিক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা) আমাদের নাম দিলেন ‘ওরা এগারো জন’ । আমরা মানে মিলি, রুমা, রুনা, লুবনা, খুকু, শুচি, বাবু, মিল্কি, আলতু আর মিরাজ এই এগারো জন। আমরা তখন ঘাসে ঘাসে পা ফেলি আর দেখি কোনটা স্বপ্ন কোনটা সত্য।
আমরা একটু একটু করে বুঝি দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন কলেজের ছেলেমেয়েরা ভার্সিটির সাংবাদিকতা বিভাগে বন্ধু হয়ে উঠেছি। বন্ধু মানে একসাথে আড্ডা হো হো, একসাথে বাঁচা- একসাথে স্বপ্ন দেখা, একসাথে এক টাকার লাল চা ভাগ করে খাওয়া, ঝগড়ার পর কাঁধে কাঁধ রেখে এগিয়ে যাওয়া। ক্যাম্পাসের গল্পগুলো যেন সব একরকম। ডাস ক্যাফেটেরিয়ায় আলু সিঙ্গারা দিয়ে চা , টেবিল চাপড়ে গান গাওয়া, গ্রুপ স্টাডির নামে আনলিমিটেড আড্ডা, ডিপার্টমেন্টের করিডোরে ছোট ভাইবোনেদের সাথে হাসি, বৃষ্টির দিনে কাক ভেজা হয়ে লাল দোতালা বাসে বাড়ি ফেরা। বাড়ি ফিরেই টিএন্ডটি ফোনে সেই আলাপ, ‘মিলি বাড়ি ফিরেছিস’? ‘রুমা আজকের ক্লাসটা কি সুন্দর ছিল না!” আর সাথে সাথে মায়েদের বকুনি-ইশ সারাদিন ক্যাম্পাসে থেকে বাড়ি ফিরেই আবার ফোন।
ভার্সিটিতে পড়লেও আমরা কেমন অবুঝ সবুজ ছিলাম। বড় হবার প্রাণান্তকর চেষ্টায় সিনিয়র আপাদের অনুসরণ করতাম। ‘আয়রে আয় জীবন, ডাহুক পাখি, ব্যাকুল বসন্ত’ বলে আপারা কেমন হেঁটে যায়- দূর থেকে শোনা যায় তাদের উচ্ছ্বসিত আহ্লাদী রিন রিনে হাসি। ভেঙে গুড়ো গুড়ো হয়ে পড়ছে দুপুর- আহা আপারা যেন পরী উড়ে যায় সেমিনার রুমের দেয়াল ফুঁড়ে।
বন্ধুদের মধ্যে রুমা সবচেয়ে জনপ্রিয় । ও খুব মিষ্টি প্রেমের কবিতা লেখে আর মিলি গান করে দারুন।মিলি ওত সুন্দর গান করে আর দেখতে এত সুন্দর ওকে সবার ভালো লাগে। রুনা আমাদের বিউটি স্পেশালিস্ট সুন্দর সাজাতে পারে ওর কাছে পাওয়া যায় পুরোনো সানন্দা আর নানা রকম গাছের চারা। ফুজি নুডলস চুলের সুন্দরী লুবনা আমাদের সবাইকে ভরিয়ে তোলে আনন্দে। ওর সাথে কথা বললেই মন ভরে যায় |আমরা মেয়েরা যা হয় আর কি পড়াশুনায় সিরিয়াস। ওদিকে ছেলেদের পড়ার কোন খবর নেই। পরীক্ষা তো কি! পড়ায় সিরিয়াস বলে বেশিরভাগ নোট লেখার মূল দায়িত্ব আমার।আর তাই আমি আলাদা ভাব নিয়ে চলি। ক্লাসে স্যারদের পড়া আমি মিস করিনা, রুমাও ভাল পয়েন্ট লিখে। ছেলেদের খাতা সাদা ফকফকা কোন পয়েন্ট নেই, মিল্কির খাতায় পাওয়া যায় হাতে আঁকা কার্টুন ।
শুচি যখন (বিখ্যাত সাংবাদিক হাসনাইন খোরশেদ) ক্লাসে ঢোকে তখন স্যাররা ক্লাস শেষে বেরুচ্ছেন। উনি এমন ভাব করতে ক্লাসে ঢুকবেন যেন মহা জরুরি কোন কাজ ফেলে তিনি এসেছেন। আর বাবু? সে বেচারী শুচিকে ঘুম থেকে উঠিয়ে ক্লাসে আনতে আনতে লেট লথিফ উপাধি পায়। তার পড়া সবসময় পরীক্ষার আগের রাত্রিরে –তা ক্লাস টেস্ট হোক, ইনকোর্স হোক আর সেমিষ্টার ফাইনাল হোক। একবার পরীক্ষার আগের দিন যথারীতি বাবু ফোন দিয়েছে-পড়ার তার সময় নেই ফোনে পড়াটা বলে দিতে হবে। আমি রাগ করে বলেছি, “তোকে আমি ফোনে পড়াতে পারব না- পরীক্ষার আছে মাত্র এক দিন। বাবু গম্ভীরভাবে বলল, ‘না না এখন পড়াস না, আমার এখন সময় নাই, কাজিনদের সাথে বাইরে যাব। আমি তো সিলেবাসই জানি না, আগে সিলেবাসটা বল। আড্ডা শেষে রাত নয়টায় আমি তোকে ফোন দিব’। আমার তো বাগধারা “আক্কেল গুড়ুম” অবস্থা। আমি বলি, ‘বাহ তুই সিলেবাসই জানিস না’? ও নিশ্চিন্তে বলে, ‘টেনশন নিস না। ১০/১২ ঘন্টা বাকী। ঠিক কভার করে নিব’। এইভাবে বাবু কেমন করে জান সব কভার করে ফেলে। জাপানে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে এই ছেলে এখন কানাডায় চাকরি করছে।
সেকেন্ড ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষার আগে ঠিক হলো শুক্রবার একসাথে আমরা পড়ব। মেয়েরা ছেলেরা সবাই আমাদের বাসায় আসবে। সেদিন শুধু পড়া আর পড়া। নো আড্ডা, নো হাহা হিহি। সকালে নাশতার আগে ছেলেরা হাজির। আমি আম্মার সাথে তাড়াহুড়ো করে পরোটা বানাই, সাথে ডিমের হালুয়া, সবজির লাবড়া, ডিম। নাশতার টেবিলে বলি,’ দ্যাখ তোদের জন্য পরোটা ভাজতে গিয়ে আমার হাত পুড়ে গেছে। মিল্কি বলে উঠল, ‘হায় হায়! আমাদের পরোটা পুড়ে নাই তো? কোথায় কি। আবার হাহা হিহি! এর মধ্যে হৈ হৈ করতে করতে রুমা, রুনা, মিলি আর লুবনা হাজির। সেদিন পড়াও হয় আড্ডাও হয়। পরদিন রুমার বাসায় পড়া। মিরাজ ( বর্তমানে বিবিসির বিখ্যাত সাংবাদিক) বলে, ‘তোর বাসায় কি খাওয়া হবে রুমা’ ? ‘কি পড়া হবে খবর নাই’ – রুমা স্বভাবসুলভ ভাবে তেড়ে ওঠে। আলতু(বর্তমানে বিবিসির বিখ্যাত সাংবাদিক) আমাদের এগারো জনের তুখোড় এক জন। এর মধ্যে রিপোর্টিং এ ফিলিপস পুরস্কার পেয়ে চমকে দিয়েছে। সে দায়িত্ব নেয় না কাল পড়া হবে – আড্ডা হবে, হবে মিলির গানও।মিলির গানের ঘোষণা শুনে আমাদের পড়ার চিন্তা চলে যায়। বড় গায়িকাদের মত মিলির আবার প্রায়ই গলা ব্যথা থাকে। তাই মিল্কি বলল, ‘শোন তুই স্ট্রেপসিল নিয়ে কাল রুমার বাসায় চলে আসবি। আমিও আবৃত্তি করব’। ওহ গায়িকাকেই কিনা স্ট্রেপসিল আনতে হবে। কি আব্দার! তবে বন্ধু বলে কথা। গান কবিতার সংস্কৃতির অনুষ্ঠানে কত যে পড়া হবে আমি মনে মনে আঁতকে উঠি। মিরাজ দুষ্টু হাসি দিয়ে বলে ভীনা টেনশন নিস না, আমরা ঠিক পড়ব। বাবু বাকীটা শেষ করে আমরা ঠিক কভার করে ফেলব। হা হা।
মিরাজ এর বিষয়টা অদ্ভুত। ও মেধাবী ছেলে দিব্যি কথা বলছে, যোগযোগের তত্ত্ব নিয়ে দার্শনিকের মত আলোচনা করছে–শুধু আলোচনা নয়– বোঝাচ্ছে সেই সব তত্ব কিন্তু শুধু যদি নাম জিজ্ঞেস করা হয়, তোমার নাম কি? উনি তোতলাতে তোতলাতে বলবেন ‘ওয়ালি –উ—র রহ— রহ—মনে – মি-মিরাজ। আমরা হেসে উঠলে মিল্কি বলে, ‘আরে পাশে একটা জুনিয়র মেয়ে ছিল কিনা তাই নার্ভাস ছিল’। ‘জুনিয়র মেয়েদের সবচেয়ে আগে নজরে পড়ে মিল্কির’ রুমা রায় দেয়। সত্যি আমার বন্ধুরা সবাই এক একজন ট্যালেন্ট |
শুচি দেখতে নিপাট নিরীহ মনে হলেও সে তা নয়। আমাদের এডিটিং পড়াতেন খন্দকার আলী আশরাফ স্যার- দৈনিক বাংলায় স্যাটায়ার লিখে তিনি খ্যাতি অর্জন করেছেন সে সময়ই। একদিন ক্লাসে দুষ্টুমী করার জন্য শুচিকে বকা দিয়েছেন। আমরা সবাই চুপ। স্যার বকছেন, ‘কেন তুমি দুষ্টুমী করে ক্লাসে পড়া নষ্ট করছ’? শুচি বলল, ‘স্যার আমি বিষয়টা ক্লাস শেষে বলব’। ক্লাস শেষে ক্লাসরুমে শুধু স্যার আর শুচি। স্যার বললেন, ‘বলো এবার। শুচি মাথা নীচু করে বলল, ‘স্যাটায়ার নিয়ে একটা মজার কথা মনে হয়েছিল’। ‘বেশ তো, শুনি কি এমন স্যাটায়ার যা আমার ক্লাস পন্ড করে’। শুচি বিনয়ী হয়ে বলল, ‘সেটা শুনলে আপনি নিতে পারবেন না’। স্যার উদগ্রীব হয়ে উঠেছেন ‘তুমি তো ইউনিভার্সিটি করেসপনডেন্ট মানে সাংবাদিক। আমিও তাই। সাংবাদিকের সাথে সাংবাদিকের কথা বলে ফ্যালো । ‘আচ্ছা স্যার কা-আ-আ। মানে ? অবাক হন স্যার। ‘এটা আবার কি’? শুচি ঢোক গিলে বলল, ‘স্যার ক্লাস করতে গিয়ে হঠাৎ মনে হলো আপনার নাম খন্দকার আলী আশরাফ, সেটাকে সংক্ষেপ করলে ‘KAA’ কা মানে ‘ কা-আ হয়। ‘কি বললে’? ‘স্যার চমকে উঠলেন ভারী চশমার ফাঁক দিয়ে। তারপর হেসে ফেললেন ‘হো হো হো’। স্যারের হাসি থামছে না। হাসছে শুচিও। আমরা ক্লাসের বাইরে সে হাসি শুনছি আর ঘটনা শুনেছি পরে শুচির কাছে। এই মেধাবী ছেলে একদিন অনার্সের পর ক্লাসে এসে দুম করে বলল, ‘আমি আর পড়ব না । আমি পুরোদস্ত্তুর সাংবাদিক হব’। মেধাবীরা সাহসী হয়। সে অন্য গল্প।
বাবা মা দিব্যি দিয়েছিলেন সাংবাদিকতা পড়তে দিয়েছি বটে, সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে নিতে পারবে না। কিন্তু লেখা ছাড়া কি বাঁচা যায়? পড়তে পড়তে আমিও একটু আধটু অনুবাদ করছি ভারত বিচিত্রা আর একতায়। ফিচার লিখছি, রিপোর্ট লিখছি অনন্যা, ‘ঢাকার চিঠি’ আর ‘বিচিন্তায়’। বন্ধুরা যখন ক্লাস ফাঁকে আড্ডা দেয় আমি তখন জার্নাল সেকশনে হারিয়ে যাই আমার মত করে। লেখা মানে স্বপ্নে বুঁদ হয়ে থাকা। আমি স্বপ্ন দেখছি শুধু গণমাধ্যম বিষয়ক ক্ষুদে পত্রিকার। বন্ধুদের বলি সে স্বপ্নের কথা। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে করতে চাই দারুন একটা প্রথম সংখ্যা-আন্তর্জাতিক প্রেক্ষিত থাকবে, দেশের কথা থাকবে তত্ত্ব কথার সরস উপস্থাপনা, বড় সাংবাদিকের অভিজ্ঞতা তৃণমূল পত্রিকার সাংবাদিকতা এ সবই থাকবে। এতে বন্ধুরা সব হই হই করে ওঠে। ডিপার্টমেন্টের প্রথম গণমাধ্যম বিষয়ক ক্ষষুে দত্রিকা ‘মিডিয়া’ বের হয় আমার সম্পাদনায়। বন্ধুরাই আমার টিম। ঐ যে বন্ধু মানে একসাথে বাঁচা, একসাথে স্বপ্ন দেখা এক টাকার লাল চা ভাগ করে খাওয়া।
আমরা তখন বন্ধুরা খুব পড়ছি সুনীল গঙ্গোঁপধ্যায়, সমরেশ মজুমদার আর শীর্ষেন্দ্র বন্দোপাধ্যায়। আহ ‘সেই সময়’ ‘পূর্ব পশ্চিম’ ‘কালবেলা’ পুরুষ গর্ভধারিণী দূরবীন এর সেই ঘোর লাগা অপূর্ব সময়। অতীন বন্দোপাধ্যায় বাণী বসু, মতি নন্দিও খুব ভালো লাগছে। ঐ সময়ে দেখি হুমায়ূন আহমেদ প্রবল পরাক্রমে এগিয়ে যাচ্ছেন জনপ্রিয়তায় কিন্তু মিলনের প্রেমের উপন্যাস মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস ছিল আমাদের সময়ের ছাত্রছাত্রীদের পছন্দের তালিকায়। নাসরিন জাহান আর মইনুল আহনাস সাবের অন্যরকম ভালো লাগা তৈরি করছে। অস্থির সময়ে কবিরা উচ্চারণ করে যাচ্ছে অসাধারণ সব পংক্তিমালা। কবি যে সময়ের অনুবাদক, তাকে রুখবে কে? অনন্য হুমায়ুন আজাদ আক্রমণ করে চলেছেন চারপাশকে। আমরা বিস্ময়ে দেখছি বুদ্ধিজীবীদের লড়াই। এমন নেশার মত গল্পের বই পড়ছি যেন ওটাই আমাদের মূল সিলেবাস। ওরিয়ানা ফালাশী সাংবাদিকতা বিভাগে ছেলেমেয়েদের কাছে প্রিয় নাম। আমরা নীলক্ষেত থেকে ফালাসীর ১০টি সাক্ষাৎকারের বই জোগাড় করে ফেলি। তারপর পালা করে শুধু সে বই পড়া।
স্কুল কলেজের বন্দী জীবনের পর মুক্ত বন্ধনহীন বর্ণময় জীবন। শ্লোগান চলছে লড়াই লড়াই, লড়াই চাই –বাঁচার মত বাঁচতে চাই| টি এস সি তে হেলাল হাফিজ আর নির্মলেন্দু গুণ আবৃত্তি হচ্ছে।হৈ হৈ আড্ডায় মধুর ক্যান্টিনের ক্ষুদে মিষ্টি ও চা বিক্রি হচ্ছে খুব |সব কিছুর আকর্ষণ অতিক্রম করে ক্লাসরুম আমার কাছে বড় হয়ে ওঠে। কারণ ক্লাসের পড়াগুলো গল্পের বই এর চেয়ে মজার, শ্লোগানের চেয়ে উত্তেজনাকর আর আবৃত্তির চেয়ে ছন্দময়।
আমাদের পড়াগুলো খুব মজার। পড়াগুলো যেন চারপাশের পৃথিবী দেখার জানালা। পৃথিবীতে ঘটে যাওয়া ঘটনা পুঞ্জ থেকে গুটিকয় কেন খবর হয়ে ওঠে? তত্ত্ব কথায় ‘সংবাদ মূল্য’ পড়ছি। ব্যাখা করছি কিভাবে ঘটনা খবর হয়ে ওঠে? জনের খবর, ধানের খবর, বানের খবর আর গানের খবর মিলিয়ে খবরের বিশাল রাজ্য। পড়ছি গণমাধ্যমের শ্রেণিচরিত্র সংবাদ/পণ্যের উৎপাদন পদ্ধতি আর গণযোগাযোগের হাজারো তত্ত্ব।সাংবাদিকতা কি পড়ার বিষয় তাই তখনো প্রতিষ্ঠিত নয়- স্যার ম্যাডামরা পড়াচ্ছেন News কি – এর হাজারো সংজ্ঞায় আমরা তোলপাড় করে সংবাদমূল্য খুঁজি- সাংবাদিকতা বিভাগের ক্লাস করতে গিয়ে আমরা ক্রমে দেখতে পাই একটি একচোখা পৃথিবীর মানুষ আমরা, যেখানে কতিপয় মানুষ দিন দিন ফুলে ফেঁপে অতিকায় হয়ে উঠছে বিত্ত ও ক্ষমতায়। অর্থ শক্তিতে তারা কিনতে পারে মাঠ, তারা পাহাড় কেটে বাংলো বানাতে পারে, পারলে একখানি সমুদ্র তাতে জুড়ে দেয়- মাইল দশেক আকাশ কেনাও যেন অসম্ভব নয়।
গণযোগাযোগের তাত্ত্বিক উইলবার শ্র্যাম থেকে ওয়াল্টার লিপম্যান সবাই সুন্দর , অতি সুন্দর। ওয়াল্টার লিপম্যানের সেই বিখ্যাত উক্তি “ When all men think alike, no one thinks very much” কিংবা শ্র্যামের ‘Message lies with the receiver’ উৎস যাই বলুক প্রাপক যা গ্রহণ করে তাই বার্ত কি গভীর এর অর্থ! মিশুক মুনীর স্যার জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন ঝকঝকে স্মার্টনেস, রুচি আর প্রাণবন্ত ক্লাসের জন্য। তৃতীয় বিশ্বের অর্থনীতি, উন্নয়ন তত্ত্ব, গণমাধ্যমের ভূমিকা পড়াতে পড়াতে চলচ্চিত্রের আন্দোলনের কথা বলেন। সবই আমাদের তরুণ মন স্পর্শ করে, আলোড়িত করে।
আমাদের পড়ার সিলেবাসে ঐচ্ছিক বিষয় ‘বিজ্ঞাপন’। পণ্যের একমুখী যোগাযোগ এবং মানুষের মনোজগতে এর প্রভাব এর বিষয়টি জটিল ও রহস্যময়। সে সময়কার টিভি ছিল সাদা কালো, দিনগুলো ছিল রঙীন, বিজ্ঞাপনগুলো বর্ণিল। সে সময়কার বিজ্ঞাপন মানে রাণী রাণী বৌরাণী শাড়ী’, মডেল নেট মিষ্টি হাসির সাথে গাইছে গান। ‘কেয়া সুপার লেমন সোপ’। বিজ্ঞাপন মানে ‘সাদা সাদা আরো সাদা টুথপেস্ট’ কিংবা ‘তফাতটা রাতদিন তাই মধুমতি লবণ’। কোক, গুড়ো দুধ, সিগারেট আর চাপাতার বিজ্ঞাপনের ভেসে যাচ্ছে টিভি পর্দা। টিভিতে আবুল হায়াত বলে যাচ্ছেন ‘ফিনলে চা আসল চা’। পরীর মত ছোট এক মেয়ে অ্যাংকর দুধ খেয়ে মায়াবী কণ্ঠে বলছে, ‘আম্মু তুমি লক্ষী’। ‘যেখানে আনন্দ সেখানেই নাকি কোকাকোলা’। দেখছি ‘মাছের রাজ ইলিশ, বাত্তির রাজা ফিলিপস’।
মফিদুল হকের ‘মনোজগতে উপনিবেশ’ নামে অসাধারণ এক বই পড়লাম। বিজ্ঞাপন যতই দেখি ভেতরের নারীবাদী মন বিদ্রোহ করছে। পণ্যে নারীদেহের ব্যবহার হচ্ছে নারীকের ফর্সা হতে হবে, কোমনীয় মোহনীয় হতে হবে- ম্যাজিক জিঙ্গেল আর সম্মোহনী দৃশ্য ও অভিনয় দিয়ে পুরুষতান্ত্রিক ভাবনা মানুষের মনে এ গেঁথে ফেলার কাজ নিবেদিতভাবে করে চলেছে এই মাধ্যমটি। ক্লাসে সেসময় ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান নুরুদ্দিন স্যার বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে প্রাচীন কাল থেকে চলছে বিজ্ঞাপন বা বিশেষভাবে জ্ঞাপন। রবিঠাকুর, নজরুল পর্যন্ত বিজ্ঞাপন লিখেছেন। বৎস্য বিদ্রোহী না হয়ে বিষয়টা বোঝো’। রেলগাড়ি আর কোন এক চুলের তেলের বিজ্ঞাপন লিখেছেন রবিঠাকুর। স্যার বলে যান, ‘বিজ্ঞাপন প্রভাবিত করবে, প্রতারিত নয়’। বিজ্ঞাপন যা কিনা বাজার সম্পসারণ করে , মানুষকে ভোগবাদী করে তোলে তার জন্য রয়েছে নৈতিকতা, এটি হতে পার কল্যাণকর। আমাদের দেখার তৃতীয় একটা চোখ তৈরি হচ্ছে। বিশ্লেষকের জন্য নতুন একটা মন জেগে উঠেছে।
আমরা যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি বিশ্ব রাজনীতিতে গ্লাসমস্ত আর পেরেস্ত্রেইকার তথাকথিত খোলা হাওয়া দুর্বার গতিতে বয়ে চলছে। বিশ্ব অর্থনীতির বাঁক বদল হচ্ছে- গ্লোবালাইজেশনের জ্বরে কাপছে সব। আমাদের তরুণদের কাছে সে সময়টা ভয়ংকর– সে সময়ে পরাক্রমশালী সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে পড়ছে, ভেঙে পড়ছে লেনিন আর মার্কসের মূর্তি। প্রতিনায়ক গর্বাচেভ পশ্চিমা দুনিয়ার কাছে নায়ক হয়ে উঠছেন। দেশে চলছে সামরিকতন্ত্রের বৈরি সময়, বুটের নীচে হারিয়ে যাচ্ছে সব। দিনগুলো বিবর্ণ সবুজ। মাঝে মাঝেই চলছে অস্ত্রের মহড়া। সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য গঠিত হয়েছে।কেবল রূপকথার কাল পেরিয়ে আমরা কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার পর পর দেখলাম গণতন্ত্রের জন্য শহীদ হলেন নূর হোসেন। বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়ার আগে আগে শহীদ হলো রাজু, ছাত্র ইউনিয়নের কর্মী এবং আমার ছোট ভাই পাভেলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু।
ক্লাস নিলেই শিক্ষক হওয়া যায় না। আমাদের সাংবাদিকতা বিভাগের স্যার আর ম্যাডামরা তা প্রমাণ করেছেন। তারা প্রকৃত অর্থেই শিক্ষক। প্রথম দৃষ্টি কাড়েন আনিস স্যার-তিনি আমাদের প্রথম বিষ্ময় –এই স্যার অদ্ভুত সব কাজ কর্ম করে চলেছেন- হ্যাট পরে ঘোরেন, ডিপার্টমেন্টের রুমে সাজিয়ে রাখেন কৃষকের মাথাল আর গুচ্ছ ধান। স্যারের যুক্তি তিনি কৃষক পিতা, তাই গ্রামকে ভুলতে চান না –একইসাথে ছাত্রদের মনে করিয়ে দিতে চান গ্রামীণ জীবনই দেশের মুল শক্তি। তিনি সংবাদপত্রের ইতিহাস পড়াতে গিয়ে ক্লাসে নাটকীয়ভাবে পড়ে চিৎকার করছেন ‘চে চে’। কখনো ক্যাস্ত্রোর চুরুট নিয়ে কথা বলছেন-ক্লাসের ছেলেমেয়েরা বলিভিয়ার জঙ্গঁলে – ঘুরে বেড়াচ্ছে। আনিস স্যার সংবাদপত্রের ইতিহাসের ওপর ক্লাস নেন। বর্তমান ক্লাসকে তিনি অবলীলায় অতীতে রুপান্তর করতে পারেন। স্যার আমাদের নিয়ে গেলেন অতীশ দীপংকরের ভিটায় গল্পে গল্পে বললেন ডিরোজিওর কথা। সেই যে উনিশ শতকের জীর্ণ সমাজে ঝড় তোলা কলকাতার হিন্দু কলেজের প্রথা ভাঙা শিক্ষক। স্যার বলছেন, তোমরা আমার ‘ইয়ংবেঙ্গল’ তোমাদেরকে আমি ডিরোজিওর মত বলব, ‘সত্যের জন্য বাঁচো, সত্যের জন্য মরো’। কি কঠিন কথা ।
স্যার-এর ক্লাসে ইতিহাসের পাতা থেকে উঠে এসেছেন বৃটিশ অভিজাত তরুণ জেমস অগাস্টাস হিকি। বার্মিংহাম ছেড়ে চোখের জল মুছে জাহাজের ব্যবসা করতে তিনি নেমে আসে ভারতবর্ষে। জাহাজ ব্যবসায় মার খেলে তিনি প্রকাশ করেন ভারতবর্ষের প্রথম পত্রিকা হিকিজ গেজেট; প্রথম সংখ্যার কাগজে বাজিমাৎ। খবরের পাশে ছিল কবিতা ও বিজ্ঞাপনের বাজার। হিকির হুংকার তখন শ্বেত সমাজকেও কাঁপিয়েছিল। এই কাগজ তৎকালীনর গভর্নর জেনালের হেস্টিংসের বিরুদ্ধ দুর্নীতির খবর ছাপায়। সত্য বলার অপারাধে কারাদন্ড হয় হিকির। জেল থেকে যখন বেরুলেন তখন শক্তিহীন, স্বপ্নহীন কপর্দকহীন মানুষ তিনি। তবু ভাগ্য আবেষণে চীনের উদ্দেশ্যে ভারত ছাড়লেন। সে যাত্রাই তার শেষ যাত্রা ছিল। সংবাদপত্রের ইতিহাস পড়তে গিয়ে ইতিহাসের অবগুণ্ঠন খুলে আমরা ‘সমাচার দর্পণ’ ‘দিকদর্শন ও বেঙ্গল গেজেট’ দেখি না আমরা দেখি হিকি, ডিরোজিও,ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, বঙ্কিমচন্দ্র এবং সবোর্পরি ঊনিশ শতককে |
ক্যাম্পাসে আমরা পেলাম ইংল্যান্ড থেকে ডক্টরেট ডিগ্রী নিয়ে আসা সেতারা ম্যাডাম আর আহাদ স্যার দম্পতিকে। ড. সেতারা ম্যাডাম এমন নরোম অথচ কঠিন তার ব্যাক্তিত্ব। ম্যাডাম যেখানেই তাকান ফুল ফোটে সেখানেই। ম্যাডাম পড়াচ্ছেন নারীবাদী তত্ত্ব আর আমরা ভক্ত হয়ে উঠেছি তাঁর—ক্লাসের ফাঁকিবাজ ছাত্রটিও তাঁর ক্লাস মিস করে না |নারীর গৃহ ও কর্মের দ্বান্দিক সম্পর্ক পড়ান ম্যাডাম। হেনরিক ইবসেনের নাটক অ্যা ডলস হাউস’ এর নোরা চরিত্রের ব্যাখ্যা ম্যাডাম যেভাবে করেছেন তা আর কারুর কাছে পাইনি। নারীবাদী তাত্ত্বিক কেইট মিলেট আর স্টুয়ার্ট মিলকে আমরা পাই ম্যাডামের ক্লাসে। ম্যাডাম বলেন গণমাধ্যমও বাণিজ্য করে নারীদেহে। পুরুষতান্ত্রিক দুনিয়ার বিরুদ্ধে নরম মানুষটি একটি তর্জনী তুলেছিলেন।
মাস্টার্সের ঠিক দশদিন আগে পরীক্ষার এডমিট কার্ড নিতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হলাম। পায়ে ফ্যাকচারসহ শরীরে নানা জায়গায় আঘাত নিয়ে একদম বিছানাবন্দী। গোলাম রহমান স্যার এ খবর শুনে মাকে বললেন পরীক্ষা দিক আগামী বছর। পরের বছর ভালো রেজাল্ট নিয়ে বেরুবে। আমার জেদ এ বছরই পরীক্ষা দিব। পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখি আমার বন্ধুদের উদ্বিগ্ন মুখ ।মিরাজ আর আলতু বার বার ফোন দেয়- আফসোস করে ইশ এটা কি হলো। কি হেল্প লাগবে বল। বাবু ফোন দিয়ে বলল, শোন আমি পড়ছি সিরিয়াসলি। তুই না পড়তে পারলে সমস্যা নেই। আমি ফোনে পড়াগুলো বলব তুই শুনলেই পারবি। রিভিশন দেওয়া লাগবে না, তুই কভার করতে পারবি, টেনশন নিস না। আমি হাসি, হাসির আড়ালে আসলে অশ্রু লুকাই। মিলি ফোন দেয় বার বার, ‘গান শুনলে কি ভাল লাগবে ভীনা ? প্রতিদিনি আমি তোমাকে গান শুনাব। আমি হাসি, হাসির আড়ালে আসলে অশ্রু লুকাই। শুচি সাহস দেয়, ‘তোর পা ভেঙেছে, হাত তো না। হাত দিয়ে পরীক্ষা দিবি- কোন সমস্যা নাই। পড়ারও দরকার নেই-পরীক্ষা হলে বসলেই হবে। আমি চাঙ্গা বোধ করি। রুমা লুবনা রুনা সব দল বেধে বাসায় আসে- তুই শুয়ে থাক আমরা পড়ি আর তুই শোন। জ্বরে কাহিল আমি বলি, ‘তোরা বাসায় গিয়ে নিজেদের পড়া পড় –আমি ঠিক মত পরীক্ষ দিব’।
ভালবাসা সংক্রমক। পড়া শেষে দেখি ক্রমে ‘ওরা এগারো জনে’ যুক্ত হচ্ছে নতুন সব বন্ধু। রুমার জনপ্রিয়তার কল্যাণে কাছে আসছে জ্যোতি, সোহেল পবন, টিটু, আনিস, লোটাস,ফুয়াদ, কবিতা, রেবা, লাবন্য, ইফফাত আপা, শাম্মী তাহমিনা, জাকারিয়া, প্রিন্স, মামুন। সবাই কি ভাল। সবাই কেমন বন্ধু হয়ে উঠল। মাস্টার্স যখন শেষ করছি দেখি পুরো ক্লাসেই আসলে কবে যেন বন্ধু হয়ে উঠেছে।
[ আমার শিক্ষকদের মধ্যে ক.আ.ই.ম নুরুদ্দিন,খন্দকার আলী আশরাফ, ড. সেতারা পারভীন, মিশুক মুনীর আর আনিস আহমেদ স্যার অকালে প্রয়াত হয়েছেন। আমার শ্রদ্ধাঞ্জলি থাকল শিক্ষকদের জন্য। কে বলে মারা গেলে সব শেষ হয়ে যায়। যতদিন আমরা মানুষকে স্মরণ করি –ততদিন তাঁরা বেঁচে থাকেন। আর প্রকৃত শিক্ষকদের মানুষ স্মরণ করে বহুকাল- তাঁরা অমর ]
লেখক: সাহিত্যিক ও কলামিস্ট।।

অতিথি লেখক