শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা আজ

শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা আজ

নিজস্ব প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ ১৩ মার্চ (মঙ্গলবার)। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব গৌতম বুদ্ধের জন্মোৎসব শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা। গৌতম বুদ্ধের শুভ জন্ম, বোধিঞ্জান লাভ ও মহাপরিনির্বাণ এই ত্রিস্মৃতি বিজড়িত বৈশাখী পূর্ণিমা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের শ্রেষ্ঠতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। বিশ্বের সব বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কাছে এটি বুদ্ধপূর্ণিমা নামে পরিচিত। বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটির দিন। বৌদ্ধ ধর্ম মতে, এখন থেকে ২ হাজার ৫৫৭ বছর আগে মহামতি গৌতম বুদ্ধ আবির্ভূত হয়েছিলেন। তার জন্ম, বোধিলাভ ও মহাপ্রয়াণ বৈশাখী পূর্ণিমার দিনে হয়েছিল বলে এর (বৈশাখী পূর্ণিমা) অন্য নাম দেয়া হয় ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা’। যথাযথ ধর্মীয় ভাবগম্ভীর্য পরিবেশে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষরা তাদের এ প্রধান ধর্মীয় উৎসব পালনের লক্ষ্যে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তার বাণীতে বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন আজকের এ অশান্ত ও অসহিষ্ণু বিশ্বে মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ ও সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় মহামতি বুদ্ধের জীবনাদর্শ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। ‘শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা-২০১৪ উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মৈত্রীময় শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, মহামতি গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বুদ্ধত্ব লাভ ও মহাপরিনির্বাণ- এই ত্রিস্মৃতি বিজড়িতই হলো শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, হিংসায় উন্মত্ত পাশবিক শক্তিকে দমন করার জন্য আজকের পৃথিবীতে মহামতি গৌতম বুদ্ধের শিক্ষার একান্ত প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি বলেন, ভয়, লোভ-লালসাকে অতিক্রম করে গৌতম বুদ্ধ সারাজীবন মানুষের কল্যাণ এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় অহিংসা, মৈত্রী ও করুণার বাণী প্রচার করেছেন। শান্তি ও সম্প্রীতির মাধ্যমে আদর্শ সমাজ গঠনই ছিল তার (বুদ্ধ) একমাত্র লক্ষ্য।

বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা বৌদ্ধ সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতারাও দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।

বৌদ্ধবিহার সূত্র জানায়, সকালে মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হবে। পরে বুুদ্ধ পূজা, মহাসংঘদান, মহা অষ্টপরিস্কারদানসহ বিভিন্ন ধর্মীয় কার্যাদি পালিত হবে। এরমধ্যে জগতের সব প্রাণীর সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে অনুষ্ঠিত হবে বিশেষ প্রার্থনা। বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের মতে, গৌতম বুদ্ধ বিশ্বের মানুষের দুঃখ-বেদনাকে নিজের দুঃখ বলে হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করেন। মানব জীবনের দুঃখ তার দৃষ্টিগোচর হলে তিনি সম্পদ, ঐশ্বর্য তথা সংসার জীবনের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েন এবং জন্ম, জরা, ব্যাধি ও মৃত্যু_ এ চারটির কারণ উদঘাটন এবং মানুষের শান্তি ও মুক্তির লক্ষ্যে নিমগ্ন হন। এক সময় রাজপ্রাসাদের বিত্ত-বৈভব ও সুখ এবং স্বজনের মায়া ত্যাগ করে সিদ্ধি লাভের পন্থা অন্বেষণে তিনি বেরিয়ে পড়েন অজানার পথে। দীর্ঘ ৬ বছর সাধনার পর গৌতম বুদ্ধ বোধিপ্রাপ্ত হন। বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে আজ সকাল ৮টায় কমলাপুর ধর্মরাজিক বৌদ্ধ বিহার থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হবে। এছাড়া বাংলাদেশ বৌদ্ধ সাংস্কৃতিক পরিষদ সকাল ৮টায় জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে সম্মিলিত শান্তি শোভাযাত্রা ও সম্প্রীতি শোভাযাত্রা বের করবে। সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আমস আরেফিন সিদ্দিক শান্তির শোভাযাত্রা উদ্বোধন করবেন।

নিজস্ব প্রতিনিধি