বারডেম হাসপাতালঃ ১৬ এপ্রিল থেকে চিকিৎসকদের অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ঘোষণা

বারডেম হাসপাতালঃ ১৬ এপ্রিল থেকে চিকিৎসকদের অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিনিধি,এসবিডি নিউজ24 ডট কমঃ বারডেম হাসপাতালের চিকিৎসক মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১৬ এপ্রিল (বুধবার) সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা। এর আগে ১৫ এপ্রিল (মঙ্গলবার) সকালে তারা হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করে রাখেন। কর্মবিরতির ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ রোগীরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে শুধুমাত্র বহিঃবিভাগ বন্ধ থাকার ঘোষণা দেয়া হলেও দেখা গেছে উল্টো চিত্র। হাসপাতাল থেকে বহিঃবিভাগ ও অন্তঃবিভাগ থেকে রোগীদের ফিরে যেতে দেখা গেছে।

এদিকে বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী সিরাজুল ইসলামের মেয়ে ফারহানা নাসরিন অভিযোগ করে বলেছেন, আমার বাবা বারডেম হাসপাতালের চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসা ও অবহেলার কারণেই জীবন হারিয়েছেন। এখন দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ থেকে বাঁচতে অভিনব নাটকে মেতেছেন চিকিৎসকরা। আর এজন্য তারা হাসপাতাল ভাংচুর ও চিকিৎসকদের লাঞ্ছিত করার মিথ্যা অভিযোগ তুলে মানববন্ধ করেছেন। তবে হাসপাতালের মহাপরিচালক অধ্যাপক নাজমুন্নাহার উল্টো অভিযোগ করে বলেছেন, ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ ও সাবেক এক মন্ত্রীর এপিএস বাবুর নেতৃত্বে বারডেমে ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ পরিচয়ে ভিতরে ঢুকে তারা পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। বারডেম হাসপাতালের সামনে মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের ইনডোরে ভর্তি (অন্তঃবিভাগ) থাকা রোগীরা অনেকেই চিকিৎসা না পেয়ে ফেরত যাচ্ছেন। বন্ধ ছিলো বহিঃবিভাগের চিকিৎসা ও ফার্মেসি। এছাড়াও চিকিৎসা নিতে আসা নতুন রোগীরা ভোগান্তির স্বীকার হয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন। ফলে অসুস্থ রোগী নিয়ে তীব্র গরমের ভেতরে মহা দুর্ভোগে পড়েছিলেন রোগীদের আত্মীয়-স্বজন। হাসপাতালের মূল গেইটের সামনে অন্তঃবিভাগে ভর্তি থাকা একজন রোগীর স্বামী বলেন, আমার স্ত্রী গত ৯ এপ্রিল রাত থেকে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। হাসপাতালের ১২১৬ নম্বর জেনারেল বেডে তিনি ভর্তি ছিলেন। কিন্তু আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে হঠাৎ বলা হয়েছে হাসপাতালে কোন ডাক্তার নেই, আপনারা রিলিজ নিয়ে চলে যান। তাই স্ত্রীকে নিয়ে চলে যাচ্ছি।
বারডেম হাসপাতালের চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চিকিৎসক মারধরের প্রতিবাদে হাসপাতালের জরুরী বিভাগ ব্যাতিত সকল চিকিৎসা কার্যক্রম স্থগিত করে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। মারধরের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তিও দাবি করা হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
এ বিষয়ে প্রফেসর নাজমুন নাহার মঙ্গলবার দুপুরে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আমি ডাক্তারদের অনুরোধ করেছি যাতে কোনো ইমার্জেন্সি রোগী ফেরত না যায়। আমি নিশ্চিত করেছি যে ইমার্জেন্সি ও ইনডোরের (অন্তঃবিভাগ) রোগীদের চিকিৎসা চলবে। গনমাধ্যমের কাছে দেয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইমার্জেন্সি ব্যাতিত সকল চিকিৎসা কার্যক্রম স্থগিত করার কথা কেন বলা হয়েছে এ বিষয়ে তিনি সাংবাদিদের বলেন, জুনিয়র চিকিৎসকরা ইমোশনালি এ বিষয়টি বলেছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ১৩২ নম্বর ওয়ার্ডের একটি কক্ষে হামলাকারীরা ঢুকে চিকিৎসকদের উপর সেখানে থাকা টেলিভিশন ও কম্পিউটার ছুড়ে মেরেছে। যা খুব দু:খজনক।

নিজস্ব প্রতিনিধি